নিজস্ব সংবাদদাতাঃ পুরুলিয়া
নববর্ষেও মন খারাপ ঝালদার। এবছর দোলের দিনও ঝালদার মানুষ রং খেলেননি প্রতিবাদে। কিন্তু আদালত সি বি আই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পর তপন কান্দু হত্যায় প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাবে এ আশায় বুক বাঁধছেন ঝালদা তথা পুরুলিয়ার মানুষ।
গত ৩০ শে মার্চ এই সি বি আই তদন্তের দাবীতেই প্রাক্তন বিধায়ক তথা পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাত’র নেতৃত্বে পুরুলিয়ার এস.পি অফিসের সামনে বিশাল বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করা হয়েছিলো কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। শুধু তাই নয় তপন কান্দুর হত্যাকান্ডের প্রকৃত নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে সমস্ত পুরুলিয়া জেলা জুড়ে বিক্ষোভ এবং লং মার্চ কর্মসূচী গ্রহণ করে কংগ্রেস। এ বিষয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কংগ্রেস আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী। আদালত তপন কান্দুর হত্যার তদন্তের ভার সি বি আই-এর উপর ন্যস্ত করার পরপরই উল্লেখজনক ভাবে রাজ্য সরকার আদালতের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে। কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাত এ বিষয়ে বলতে গিয়ে বলেছেন, ” রাজ্য সরকার কেন সি বি আই তদন্তের রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করলো, এই প্রশ্নের উত্তরের মধ্যেই সরকারের ব্যর্থতা প্রকট হয়ে উঠছে।”
এর মধ্যে আরো একটা অস্বাভাবিক মৃত্যুর সাক্ষী হলো ঝালদা। কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের আত্মহত্যার ঘটনা সামনে চলে আসার পর ক্ষোভে ফুঁসতে শুরু করেছেন ঝালদার মানুষ। উল্লেখ্য নিরঞ্জন বৈষ্ণবের মৃত্যু-তদন্তের ভারও আদালতের নির্দেশে এই মুহূর্তে সি বি আই -এর কাঁধে ন্যস্ত হয়েছে।
এদিকে নিহত তপন কান্দুর স্ত্রী স্বামীর হত্যার জন্য সরাসরি আঙুল তুলেছেন শাসক তৃণমূল এবং স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে গত ৫ এপ্রিল ঝালদার পৌর বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হলে কংগ্রেস তা বয়কট করে এবং বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করতে গেলে পুলিশ সেই কর্মসূচিতে বাঁধা দেয় শুধু নয়; কর্মসূচীতে অংশ নেওয়া শহীদ তপন কান্দুর স্ত্রী পুর্ণিমা কান্দুকে রীতিমতো হেনস্তাও করে বলে স্বয়ং পুর্ণিমা কান্দু অভিযোগ করছেন।
ঝালদা হত্যাকান্ড নিয়ে বলতে গিয়ে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা তথা পশ্চিম বঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী সংসদে বলেন, ” পশ্চিমবঙ্গে মানবরাজ নয়, দানব রাজ চলছে। ” উল্লেখ্য হাওয়ায় আনিস খানের রহস্যজনক মৃত্যু এবং ঝালদায় তপন কান্দুর হত্যার প্রতিবাদে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আয়োজিত তিনদিনের ন্যায়যাত্রায় অংশ নিয়ে রাজ্যে ৩৫৫ ধারা প্রয়োগের পক্ষেও জোরদার সাওয়াল করেন অধীর বাবু।
এর মধ্যেই ঝালদা পুরানো থানায় আগুন লাগার ঘটনার প্রকৃত তদন্ত না করে কংগ্রেস কাউন্সিলর বিপ্লব কয়ালকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ফাঁসানোর চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাত। তিনি আরো বলেন আন্দোলনের পথে এবং আদালতের দ্বারস্থ হয়ে এই সবগুলি ঘটনারই শেষ দেখে ছাড়বে কংগ্রেস। এই মুহূর্তে ঝালদার আনাচে কানাচে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, সঠিক তদন্ত হলেই দুধ কা দুধ – পানি না পানি হয়ে যাবে সবটা।