–প্রদীপ ভট্টাচার্য,সাংসদ।
অদ্ভুত আঁধার নেমে এসেছে রাজ্য জুড়ে। খুন-ধর্ষণ-প্রতিহিংসার রাজনীতি যেন রুটিন মাফিক ঘটনা। পশ্চিমবঙ্গে আজ মাৎস্যন্যায়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
আনিস খানের মৃত্যু থেকে শুরু করে রামপুরহাট গণহত্যা, নবতম সংযোজন হাঁসখালির বীভৎস ধর্ষণ-কান্ড! যে জিনিস বাংলার মানুষ কখনো দেখেননি, তাও দেখলাম আমরা। ঝালদাতে স্রেফ পৌরসভার দখল নেওয়ার জন্য কংগ্রেসের নব নির্বাচিত কাউন্সিলর তপন কান্দুকে হত্যা করা হলো, রেয়াত পেলেন না ওই খুনের প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণব ; মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হলো তাঁকেও।
পুলিশ আর নীরব দর্শক কেবল নয় বরং চরম অসহায়ও বটে। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আর মারামারি থামাতে থামাতেই তাঁদের দিন বয়ে যাচ্ছে।
খুব ভালো করে লক্ষ করলে দেখতে পাব ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিবাদই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমস্ত অশান্তির মূল কারণ হয়ে সামনে উঠে আসছে। ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে যারা অনৈতিক ভাবে ভাগ পাচ্ছে তাদের সঙ্গে না-পাওয়ার লোকগুলোর বখরা নিয়ে খুনোখুনি আজ রাজ্যে নিত্যদিনের ঘটনা। নিজেরা অশান্তি করছে আর পাড়া পড়শীর শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে।
আশ্চর্যজনক ভাবে রাজ্য সরকার এবং প্রশাসন তৎসহ রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত দোষীদের দোষকে জাস্টিফাই করতে ময়দানে নেমে পড়ছেন! হাঁসখালির ঘটনার পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বজ্ঞাণহীন মন্তব্য প্রকারন্তরে তো ধর্ষকদের উৎসাহ দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।
তিন-তিনবার ক্ষমতায় আসীন হয়েও শাসক তৃণমূলের মানুষের প্রতি কোনো আস্থা নেই। আর নেই বলেই সদ্য অনুষ্ঠিত কর্পোরেশন ও পৌর সভার নির্বাচনগুলিকে চরম প্রহসনে পরিণত করলো তারা।
এই চরম নৈরাজ্য থেকে মুক্তির পথ খুঁজে নিতে হবে বাংলার মানুষকেই। একমাত্র গণ আন্দোলনের উদ্ভাসই পারবে জনগণকে সঠিক পথ দেখিয়ে এই চরম দুর্দশা থেকে রাজ্যকে মুক্তি দিতে।