বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১০৭ নম্বর স্থানে ভারত, এগিয়ে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপালও

শুভাশিস মজুমদারের বিশেষ প্রতিবেদন, ১৬ অক্টোবর’২০২২

বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে (গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স ২০২২) ৬ র‌্যাঙ্ক আরো পিছিয়ে গেল ভারত। বর্তমানে ১২১টি দেশের মধ্যে ভারত ১০৭ নম্বরে রয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের থেকে পিছিয়ে ভারত। ভারতের স্কোর ২৯.১। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স-এর প্রকাশক কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং ওয়েলথাঙ্গারহিলফে এই ক্ষুধার মাত্রাকে ‘গুরুতর’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালেও এই সূচকে ভারতের অবমূল্যায়ন হয়ে ১০১ স্থান হয়েছিল। ইউনাইটেড নেশনসের লক্ষ্য পৃথিবীকে ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা-মুক্ত করা। সেই লক্ষ্যে এই রিপোর্ট প্রতি বছর তৈরি করা হয়।

বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের স্কোর চারটি উপাদান সূচকের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়, সেগুলি হল- অপুষ্টি, শিশুদের বেড়ে ওঠায় বাধা, শিশু ‘অপচয়’ (পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের উচ্চতার তুলনায় কম ওজন) এবং শিশু মৃত্যুহার।

এই সূচকগুলির জন্য ব্যবহৃত তথ্য ইউনিসেফ, বিশ্ব ব্যাঙ্ক, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা সহ বিভিন্ন জাতিসংঘ এবং অন্যান্য বহুপাক্ষিক সংস্থা থেকে নেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেশী পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপাল এবং মায়ানমার যথাক্রমে ৯৯, ৬৪, ৮৪, ৮১ এবং ৭১ স্থানে রয়েছে। সবাই-ই ভারতের উপরে রয়েছে।

এই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিরোধী নেতারা।

বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম বলেন, ২০১৪ সাল থেকে মোদী সরকারের আট বছরে ভারতের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের স্কোর ক্রমেই খারাপ হয়েছে।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রিপোর্ট অনুযায়ী বিগত ৭-৮ বছরে আরো অনেক ক্ষেত্রে পৃথিবীর মধ্যে ভারতের উল্লেখযোগ্য অবমূল্যায়ন ঘটেছে। ইউনাইটেড নেশনের ‘পৃথিবীর সুখী দেশের সূচকে’ (২০২২) ১৪৬টি দেশের মধ্যে ১৩৬তম স্থান ভারতের। বিশ্বের ‘প্রেস ফ্রীডম সূচকে’ (২০২২) ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১৫০। আমেরিকার ‘ফ্রীডম ইন দি ওয়ার্ল্ড’ (২০২২) রিপোর্ট অনুযায়ী ‘বিশ্ব গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার সমতা সূচকে’ পৃথিবীর ২১০টি দেশের মধ্যে ভারত ৯১তম স্থান অধিকার করেছে। এই ক্ষেত্রে ভারত ‘স্বাধীন’ তকমা খুইয়ে ‘আংশিক স্বাধীন’ বিশেষণ পেয়েছে এই রিপোর্টে।

পৃথিবীর ১৮০ টি দেশকে নিয়ে করা পরিবেশ সংক্রান্ত এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় ভারত সর্বশেষ অর্থাৎ ১৮০তম স্থান পেয়েছে, যা যথেষ্ট বিড়ম্বনার। আমেরিকার দুই সংস্থা ‘ইয়েল সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল ল অ্যান্ড পলিসি’ এবং কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল আর্থ সায়েন্স ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক’ এই সমীক্ষার মাধ্যমে ‘এনভায়রনমেন্ট পারফরম্যান্স ইনডেক্স’ বা ‘পরিবেশ কর্মক্ষমতা সূচক’-এ ১৮০ টি দেশের মান নির্ধারণ করেছে এবং ‘ইপিআই ২০২২ রিপোর্ট’ প্রকাশ করেছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *