সোনিয়া গান্ধী দেশের অলঙ্কার, কংগ্রেসের অহংকার

পলাশ ভান্ডারীর বিশেষ প্রতিবেদন, ২০ অক্টোবর’২০২২ঃ

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ১৩৭তম বৎসরের ইতিহাসের একটি দীর্ঘ অধ্যায়ের আজ ১৯শে অক্টোবর ২০২২, বুধবার, পরিসমাপ্তি হোলো। ১৯৯৮ সালে যখন কংগ্রেস কিছুটা বিভ্রান্ত, দিশাহারা, কিংকর্তব্যবিমূড় ঠিক সেই সময় সোনিয়াজি দলের গুরু দায়িত্বের বোঝা কাঁধে উঠিয়ে নিয়ে নীরবে, নিভৃতে, আত্মপ্রত্যয়ের সঙ্গে কংগ্রেসকে সঠিক পথে পরিচালনার মধ্যে দিয়ে ২বার অর্থাৎ ১০ বছর ভারতবর্ষকে পরিচালনা করার ব্যবস্থা করে দিয়ে ছিলেন। দীর্ঘদিন কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও কংগ্রেসের নীতি, আদর্শ, মূল্যবোধ এবং সংস্কৃতিকে পাথেয় করে, কঠিন সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তগ্রহণের মধ্য দিয়ে কংগ্রেস দলকে আজও সমানভাবে বিশ্বাঙ্গনে প্রাসঙ্গিক করে রেখে গেলেন এবং কংগ্রেস দলে সবথেকে দীর্ঘমেয়াদের সভাপতি হিসাবে ইতিহাস তৈরী করে গেলেন সোনিয়া গান্ধী। সোনিয়া গান্ধীর ত্যাগ ও তিতিক্ষা, গরীব, দুঃস্থ, আর্ত, নিপীড়িত, শোষিত মানুষের স্বার্থে লড়াই আগামীদিনে মার্টিন লুথার কিং, বাপু গান্ধী তথা নেলসন ম্যান্ডেলার সাথে সমানভাবে আলোচিত হতে থাকবে।

দু -দুবার প্রধানমন্ত্রীর আসন অবহেলায়, অবলীলায় ছেড়ে সোনিয়াজি প্রমান করেছিলেন যে, তিনি আজকের দিনে কল্পলোকের রাজনীতিক। ঠিক সেইভাবেই আজ পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সর্বোচ্চ আসন থেকে গণতন্ত্রকে অক্ষুন্ন রেখে প্রমান করলেন নিজেকে সরিয়ে নিয়ে।আক্রান্ত শরীর, ইন্দিরাজীর হত্যা, রাজীবজীর খুন, ছোট ছোট পুত্র-কন্যাকে সঙ্গী করে দুঃসহ যন্ত্রনার মধ্যেও সোনিয়া গান্ধী দেশের সেবায় অটল, অনড় থেকেছেন। নিম্নরুচির রাজনৈতিক আঘাত (যথা বিদেশিনী, গৃহবধূ, ভারতের সংস্কৃতি জানেনা) অথবা শাসকদলের নগ্ন প্রয়াস ED লাগিয়ে চোর বানানোর অপচেষ্টা কোনো কিছুই তাঁর দেশপ্রেমকে অবদমিত করতে পারেনি। আজ ভারতবাসী ধীরে ধীরে বুঝতে পারছে দেশের সেবায় এই মহীয়সী মহিলার মহান আত্মত্যাগের কথা। আর কংগ্রেসের কর্মীরা তাঁর এই নিঃস্বার্থ মহা ব্রতের সাক্ষী হয়ে থেকে যাচ্ছে। আজকের পৃথিবী যখন লোভ, হিংসা, ঘৃণায় ভরা ঠিক এই সময় সোনিয়াজি তার বিপরীত পথে হেঁটে রাজনৈতিক সমাজকে যে শিক্ষা নিজ কর্মের মধ্য দিয়ে করে দেখিয়ে গেলেন আমাদের মতো ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র কংগ্রেস কর্মীদের কাছে তা পাথেয় হয়ে থাকবে। দেশহিতের স্বার্থে তামাম হিন্দুস্থানের কংগ্রেস কর্মীরা আগামীদিনেও সোনিয়া গান্ধীর অভিজ্ঞতালব্ধ মূল্যবান পরামর্শের দিকে তাকিয়ে থাকবে। আমরা তাঁর কাছে চিরঋণী, চিরকৃতজ্ঞ।

আজ সোনিয়াজির সর্বাঙ্গীন সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু আমরা কামনা করি। আর ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসকে ঋদ্ধ করার জন্য সোনিয়াজিকে জানাই শত কোটি প্রণাম, কুর্নিশ, সেলাম।( লেখক হাওড়া জেলা কংগ্রেসের সভাপতি এবং নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির সদস্য)

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *