শুভ মিত্রের বিশেষ প্রতিবেদন
বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার শুধু বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে সিবিআই বা ইডি লেলিয়ে দিচ্ছে এতদিন ধরে তাই দেখে আসছি।কিন্তু এবার কয়েকটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও গবেষণা সংস্থা,যারা দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে কাজ করে ও তার রিপোর্ট প্রকাশ করে তাদেরও রেহাই দিচ্ছে না এই সরকার।তার কারণ একটাই, দেখা গেছে এদের বেশীরভাগ রিপোর্টে সরকারের বিভিন্ন কুকীর্তি তুলে ধরা হয়েছে।দেশের এক নামী গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চ। এদের অফিসে আয়কর তল্লাশী আরম্ভ করে তাদের ব্যতিব্যস্ত করাই প্রধান উদ্দেশ্য। একইভাবে একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছা অক্সফামের দপ্তরেও আয়কর হানা দিয়েছে।হানা দিয়েছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট অ্যান্ড পাবলিক স্পিরিটেড মিডিয়া ফাউন্ডেশন দপ্তরে।এরা কয়েকটি স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে আর্থিক অনুদান দিয়ে থাকে।সরকার নাকি নথিভুক্ত ও অস্বীকৃত রাজনৈতিক দলের অনুদান ও বৈদেশিক অনুদান সম্পর্কে তদন্ত করতেই এই তল্লাশী করছে।
বিজেপি সরকারের সমালোচক হিসাবে খ্যাত বিশিষ্ট চিন্তাবিদ প্রতাপভানু মেহতা পূর্বে সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের কর্ণধার ছিলেন।বর্তমানে এই সংস্থার অন্যতম প্রশাসক জওহরলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক মীনাক্ষী গোপীনাথন,প্রাক্তন বিদেশসচিব শ্যাম সারন,আইএমএ এর অধ্যাপক রামা বিজাপুকর,যামিনী আয়ার প্রমুখ।এরা অলাভজনক সংস্থা ও তার ফলে অনুদানের ওপর কর ছাড় পায়।এদের বার্ষিক রিপোর্ট ও বার্ষিক আয় ব্যায়ের হিসাব অডিট করিয়ে তাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত প্রকাশ করে।এরা কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তর স্বীকৃত আই সি এস এস আর বা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর সোস্যাল সায়েন্স রিসার্চ থেকে অনুদান পায়।অক্সফামের কাজ আদিবাসী, দলিত,মুসলীম,নারী ও শিশু অধিকার, খাদ্য,বাসস্থান,স্বাস্থ্য সংক্রান্ত।আবার বেঙ্গালুরুর ইন্ডিপেন্ডেন্ট অ্যান্ড পাবলিক স্পিরিটেড মিডিয়া ফাউন্ডেশন বিভিন্ন স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মিডিয়া,যেমন দ্য ওয়্যার,দ্য কারাভান,দ্য প্রিন্ট, দ্য নিউজ মিনিটস, অল্ট নিউজ,দ্য কেন বা স্বরাজ্য এর মত মিডিয়াকে অনুদান দিয়ে থাকে সাধারন মানুষের প্রয়োজনীয় তথ্য জোগান দেয় বা প্রকাশ করে। বিভিন্ন শিল্পপতি,যেমন উইপ্রোর কর্ণধার আজিম প্রেমজি,গোদরেজ,নিলেকনির মত বিশিষ্ট শিল্পপতি পরিবার এই সংস্থাটিকে আর্থিক সাহায্য দেয়।দেশের গণতন্ত্র রক্ষার্থে এইসব স্বাধীন মিডিয়ার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই মিডিয়াগুলি দেশের বিভিন্ন সরকার বিরোধী সংবাদও তুলে ধরে।তাই এদের ওপর কোপ। এভাবেই এদের দমন করে গোদী মিডিয়ায় পরিণত করাই সরকারের আসল উদ্দেশ্য।
এই সরকার কিছুদিন আগে অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দপ্তরে হানা দিয়ে তাদের ব্যাঙ্ক আকাউন্ট বন্ধ করে এদেশে তাদের নিরপেক্ষতার সাথে কাজ করতে বাধা দিয়েছে।আসলে যারা এদেশে মোদী সরকারের জয়গান না গেয়ে আসল সত্যিটা তুলে ধরবে তার পেছনে এভাবেই বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা লাগিয়ে উত্তক্ত করা হবে যাতে তারা সরকার বিরোধী কোন সংবাদ বা তথ্য সাধারন মানুষের গোচরে আনতে না পারেন।