পার্থ মুখার্জীঃ
১৯৮৩ সালে লর্ডসে ভারত জিতেছিল ক্রিকেটের বিশ্বকাপ দুবারের চ্যাম্পিয়ান লয়েড,রিচার্ড,গ্রীনিজ,মার্শাল সমৃদ্ধ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এবার ভারত জিতল ১৪ বার টমাস কাপ জেতা ফজর,কেভিন সুকামুলজো,মহঃ আহসান,সেতিয়াওয়ানর মত বিশ্ব কাঁপানো ইন্দোনেশিয়াকে।ঐতিহাসিক টমাস কাপ জয়ের জন্য ৫ টি ম্যাচ হাতে থাকলেও তিনটি ম্যাচই যথেষ্ট ছিল ভারতের কাছে। ১৪ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইন্দোনেশিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে ৭৩ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার টমাস কাপ জিতল ভারত। প্রথম সিঙ্গলসে্ তরুন ভারতীয় তারকা লক্ষ্য সেন। এবারের টুর্নামেন্টে এতদিন তেমন দাগ কাটতে না পারলেও এই ঐতিহাসিক দিনের জন্যেই যেন নিজের সেরাটা জমিয়ে রেখে ছিলেন। প্রথম সেটে হেরেও দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করে দেশকে ফাইনালে প্রথম জয় উপহার দেন লক্ষ্য, অলিম্পিক্স ব্রোঞ্জজয়ী অ্যান্টনি জিন্টিংয়ের বিরুদ্ধে পিছিয়ে পড়েও ৮-২১, ২১-১৭ ও ২১-১৬ জিতে।
তারপর আরও এক অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের সাক্ষী থাকলো গোটা স্টেডিয়াম। সাত্ত্বিক সাইরাজ রনকিরেড্ডি ও চিরাগ শেট্টির সৌজন্যে। তারা ইন্দোনেশিয় জুটি মহম্মদ আহসান এবং কেভিন সুকামূলজোর কাছে প্রথম গেমে ১৮-২১ ফলে হেরেও দ্বিতীয় সেটে রুদ্ধশাস প্রত্যাবর্তন ঘটালেন চার চারটি গেম পয়েন্ট বাঁচিয়ে ২৩-২১ পয়েন্টে। এরপর ২১-১৯ পয়েন্টে তৃতীয় গেম এবং ম্যাচ জিতে শেষ হাসি হেসে এই জুটি দেশকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন।
এরপর জয়ের ক্যানভাসে শেষ তুলির টান দেন অভিজ্ঞ কিদাম্বি শ্রীকান্ত। জেনাথন ক্রিস্টিকে ২১-১৫ এবং ২৩-২১ পয়েন্টে স্ট্রেট গেমে হারিয়ে ভারতকে ৩-০ ব্যবধানে জেতান। ইন্দোনেশিয়া, চিন, মালয়েশিয়া, জাপান ও ডেনমার্কের পর ব্যাডমিন্টনে ষষ্ঠ দেশ হিসেবে প্রথম বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত। এই জয় আরও এক কারনে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য কারন প্রনয়ের মতো দারুন ফর্মে থাকা খেলোড়ারটির কোর্টে নামবার প্রয়োজনই পড়লো না। ভারতের কোচ বিমলকুমার বলেন এই জয় আমার জীবদ্দশায় দেখে যেতে পারব ভাবিনি,আজ তাই খুব গর্ব হচ্ছে ছেলেদের জন্য।১৯৮৩ এর বিশ্বকাপ জয়ের পর ভারতীয় ক্রিকেট এক লাফে অনেক এগিয়ে গিয়েছিল,এই জয় আগামীদিনে ভারতে ব্যাডমিন্টনে বিপ্লব আনবে বিশেষ করে যুব সমাজকে টেনে আনবে এই খেলাটিতে। জয়ের পর স্টেডিয়ামে গুঞ্জরিত হলো জাতীয় সঙ্গীত। ব্যাঙ্কক সাক্ষী থাকলো এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টির যা আগামী দিনে ভারতীয় ব্যাডমিন্টনকে আরও অনেক সাফল্যের পথ ও প্রেরনা দেবে।