নিজস্ব প্রতিবেদন, ৩১ শে জুলাইঃ
এ পুরো কেঁচো খুঁড়তে কেউটে। শনিবার হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ককে গাড়ির মধ্যে থেকে প্রায় ৪৮ লক্ষ নগদ টাকা সমেত গ্রেফতার করে। গতকালই সর্ব ভারতীয় কংগ্রেস কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সাংসদ জয়রাম রমেশ এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে, ঝাড়খণ্ডের সরকার ভাঙার জন্য এসবই হলো বিজেপির খেলা। রমেশ পুরো ব্যাপারটিকে ‘অপারেশন লোটাস’- বলেও কটাক্ষ করেন। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী গতকালই বলেছিলেন, কংগ্রেস কোনো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না, ওই তিনজন দোষী হলে তাদের বিচার হয়ে শাস্তি হোক। কিন্তু এই টাকার উৎস খু্ঁজে বের করতে হবে বলেও অধীর বাবু দাবি করেন। এদিকে রবিবার সকালে দিল্লিতে সর্ব ভারতীয় কংগ্রেস কমিটির পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দেওয়া হয়, ঝাড়খণ্ডে সরকার ভাঙার অপচেষ্টা করছে বিজেপি এবং তারজন্য বিরোধী বিধায়কদের টাকার লোভ থেকে এজেন্সির ভয় কোনোকিছুই বাদ রাখছেনা বিজেপি। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরন খেরা এবং অবিনাশ পান্ডে। উল্লেখ্য অবিনাশ পান্ডে হলেন বর্তমানে ঝাড়খণ্ড প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক। অবিনাশ পান্ডে সাংবাদিকদের জানান যে, দল সব বিষয়ের উপরই তীক্ষ্ণ নজর রেখে চলেছে অনেক দিন ধরেই। তিনি বলেন সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর নির্দেশে যাদের কাছ থেকে গতকাল নগদ টাকা পাওয়া গেছে সেই তিনজন বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হলো। এই তিনজন বিজেপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে সরকার ভাঙার চক্রান্ত চালাচ্ছিলো বলেও দলের কাছে কিছুদিন ধরেই খবর ছিলো। ওদিকে ঝাড়খণ্ডে বেরমো বিধানসভার কংগ্রেস বিধায়ক কুমার জয়মঙ্গল ওরফে অনুপ সিং আজ ঝাড়খণ্ড প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রাজেশ ঠাকুরকে সাথে নিয়ে পুলিশের কাছে ওই তিনজন টাকা কান্ডে অভিযুক্ত বিধায়কের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। জয়মঙ্গল অভিযোগ করেছেন, ঝাড়খণ্ডের সরকার ভাঙার জন্য বিজেপির কথায় এই তিনজন বিধায়ক–ইরফান আনসারি, রাজেশ কশ্যপ এবং বিক্সাল কোঙ্গারি মাথা পিছু বিধায়কদের ১০ কোটি টাকা করে দেবার কথা বলছে। তারা জয়মঙ্গলকেও তাদের সঙ্গে কোলকাতা আসতে বলেছিলো এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে তাদের দেখা করার কথা ছিলো। এদিকে সমস্ত ঝাড়খণ্ড জুড়ে বিজেপির এই সরকার ভাঙার ঘৃণ্য চক্রান্ত সামনে চলে আসাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে। সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির পক্ষ থেকে ঝাড়খণ্ডে সরকার ভাঙার বিজেপির এই চক্রান্তকে কঠোর ভাবে নিন্দা করা হয়েছে এবং গণতন্ত্র রক্ষার এই লড়াইয়ে সমস্ত শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে এক হবার ডাক দেওয়া হয়েছে।