নিজস্ব সংবাদদাতা, কোলকাতা:
গত ৪ ও ৫ ধানভবনে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস আয়োজিত নব সংকল্প শিবির অনুষ্ঠিত হলো। রাজ্য কংগ্রেসের কার্যকরী সমিতির সদস্যবৃন্দ, জেলা সভাপতিগণ ও বিভিন্ন শাখা সংগঠনের প্রধান, সাংসদবৃন্দ এবং প্রাক্তন বিধায়ক ও প্রাক্তন সাংসদদের অংশগ্রহণে এই শিবির আয়োজিত হয়।
সর্ব ভারতীয় কংগ্রেস কমিটির তরফে পর্যবেক্ষক, সাংসদ ডঃ এ. চেল্লাকুমার ও সহ- পর্যবেক্ষক শরদ রাউত ও বি পি সিংহ এবং দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কতৃপক্ষের তরফে কেশব সিংহ এই শিবিরে উপস্থিত ছিলেন।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী তাঁর স্বাগত ভাষণের মধ্যে দিয়ে এই শিবিরের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। অধীর বাবু তাঁর বক্তব্যে উদয়পুর নব সংকল্প ঘোষণাগুলি সংক্ষেপে তুলে ধরে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস আয়োজিত এই নব সংকল্প শিবিরের গুরুত্ব উল্লেখ করেন।
সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং ডঃএ. চেল্লাকুমার উদয়পুরের সংকল্প শিবিরে গৃহিত রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত ও নীতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন-
-★ জাতীয় স্তরে জন ভাবনা বিভাগ,জাতীয় প্রশিক্ষণ প্রতিষ্টান ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা বিভাগ তৈরী করার সিদ্ধান্ত হয়েছে যা আগামীদিনে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।
★ গণসংযোগের জন্য প্রতিটি জেলায় ৭৫ কিমি দীর্ঘ পদযাত্রা আয়োজন করা হবে।
★ এক ব্যক্তি এক পদ নীতি গ্রহন করা হবে।
★গান্ধীজির মূল্যবোধ ও নেহেরুর ভারত দর্শনকে রক্ষা করবে সমস্ত কংগ্রেস কর্মীরা।
★সংখালঘু,দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্তদের নিশানা করে জাতপাত,ভাষা, জাতি ও আঞ্চলিকতাবাদের ওপর ভিত্তি করে ভোটের রাজনীতিকে প্রতিহত করবে কংগ্রেস।
★ জাতীয় স্বার্থে সর্বপ্রকার অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে লড়াই করবে দল।
★ কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিশদ অর্থনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহন করবে কংগ্রেস।
★চরম দারিদ্র ও ক্ষুধা নিবৃত্তি,নারী ও শিশুদের অপুষ্টি দূরীকরণ ও সম্পত্তির অসাম্য দূরীকরণের চেষ্টা করা হবে ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করা হবে।
★নির্বিচারে বেসরকারিকরণের তীব্র বিরোধীতা করা হবে।
★কৃষি বাজেট সংসদে পেশ করা ও কৃষিজমি বিমার ব্যবস্থা করা হবে।
★জাতীয় কৃষক উন্নয়ন প্রকল্প গঠন করা হবে।
★কৃষক মান্ডির সংখ্যা ৭৬০০ থেকে ৪২০০০ করা হবে।
★MGNREGA প্রকল্পে ১০০ দিনের কাজের নিশ্চয়তাপ্রদান করা হবে।
★মহিলাদের জন্য ৩৩% আসন সংসদ ও বিধানসভায় সংরক্ষন করা হবে।
★তপশিলী জাতি ও উপজাতিদের জন্য উপ- পরিকল্পনা ও আইনি রক্ষাকবচ পুনরায় চালু করা হবে।
এই বছর ভারত জোড়ো কর্মসূচি নেওয়া হবে;
এছাড়াও শিক্ষা সংক্রান্ত একাধিক প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।প্রদেশ কংগ্রেসের সাংগঠনিক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নিলয় প্রামাণিক জানান,শিবিরে অংশ নেওয়া সদস্যরা নিজেদের বিভিন্ন বক্তব্য এবং প্রস্তাবও পেশ করেন। সমস্ত ব্যাপার নিয়ে শিবিরে পারস্পরিক মতবিনিময় পর্বও চলে।
দুদিনের এই শিবিরে উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি তথা সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী, নেপাল মাহাত,শংকর মালাকার,সমীর রায়,রানা রায়চৌধুরী, মিল্টন রশিদ,দেবেশ চক্রবর্তী,পলাশ ভান্ডারী, সুমন পাল,পিনাকী সেনগুপ্ত,অমিত মজুমদার,মিল্টন রশিদ,অমিত মজুমদার, তাপস মজুমদার, প্রদীপ প্রসাদ,নীলমাধব গুপ্ত,জয়ন্ত দাস,মনোরন্জন হালদার, প্রাক্তন বিধায়ক অসিত মিত্র।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রীতম ঘোষ,চন্দন ঘোষ, অভিষেক ব্যানার্জী, অশোক ভট্টাচার্য, রবীন রায়,প্রবীর গাংগুলী,সহ আরো অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। জেলা সভাপতিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সমীর রায়,পলাশ ভান্ডারী, সুমন পাল,দেবেশ চক্রবর্তী, প্রদীপ প্রসাড ছাড়াও বক্তব্য রাখেন দীপ্তিমান ঘোষ,শুভঙ্কর সরকার, মোস্তাক আলম,আবদুস সাত্তার,সৌম্য আইচরায়,শুভাশিস ভট্টাচার্য,অমিতাভ সিংহ,কৌস্তুভ বাগচী,খাজা আহমেদ,মহিলা কংগ্রেস নেত্রী সুব্রতা দত্ত,বর্ণালী দে প্রমুখ। শিবিরে ঘোষনা করা হয় আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে একশ শতাংশ প্রার্থী দেবার লক্ষে জনসংযোগ কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
আগামী ১১ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত জেলায় জেলায় একদিনের সংকল্প শিবির করা হবে।এরপর ৯ থেকে ১৪ অগস্ট হবে প্রতি জেলায় ৭৫ কিমি পদযাত্রা যা জেলার প্রতিটি বিধানসভা ও ব্লকের মানুষদের মধ্যে জনসংযোগ রক্ষা করবে। এই পদযাত্রায় স্থানীয় বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হবে।পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এআইসিসির পর্যবেক্ষক ডঃ চেল্লাকুমার মন্তব্য করেন “বাংলায় কি গণতন্ত্র আছে? বিগত পঞ্চায়েত বা পুরসভার ভোটে অভিজ্ঞতা সে কথা বলে না।
“সব মিলিয়ে দু দিনের নব সংকল্প শিবির কংগ্রেস কর্মীদের উজ্জীবিত করে তুলেছে বলেই রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা।