তাঁর মৃত্যুর ৫৮ বছর পরেও আজও তিনি প্রাসঙ্গিক ; বলা ভালো এই সময়ে দাঁড়িয়ে সমস্ত ভারতবর্ষ তাঁর দর্শন এবং চেতনাকে আঁকড়ে ধরার প্রয়োজন অনুভব করছে।
ওরা নেহরু-কে মুছে দিতে চাইছে। কিন্তু কেন? সেই উত্তরের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে নেহেরুজির প্রাসঙ্গিকতা। যিনি মন্দির-মসজিদ-গির্জা তৈরি করাকে রাষ্ট্রের কাজ বলে মনে না করে দেশজুড়ে IIT, মেডিক্যাল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ভাইরাস গবেষণা কেন্দ্র, কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, ভারী শিল্প গড়ে তোলা এবং সর্বোপরি একের পর এক পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নকে রাষ্ট্রের কর্তব্য মনে করেছিলেন ; তাঁকে তো মুছে দিতে চাইবেই ওরা। ওরা যারা সমস্ত বিজ্ঞান মনস্কতার বিপরীতে হেঁটে ভারতবর্ষকে কয়েক যুগ পিছিয়ে দিতে চাইছে, সেই ‘ওরা’ তাই জহরলাল নেহরুর ভুত দেখছে সর্বত্র। ‘ওরা’ জানে নেহরু আসলে কোন ব্যক্তির নাম শুধু নয় বরং তা এক দর্শন ও চেতনার নাম। তাই ওরা ওদের ভয়ংকর দর্শনকে সামনে এনে নেহরুজির চেতনাকে ধ্বংস করতে চাইছে আজ। ওদের সব থেকে বড় ভয় ওই পবিত্র গ্রন্থটাকে! যার নাম ‘ভারতের সংবিধান, সেই সংবিধানকে ধ্বংস করাই ওদের লক্ষ। কারণ সেই সংবিধান ভারতবর্ষের যুগ যুগের বহুত্ববাদী নির্যাসকে, সৌভ্রাতৃত্বের ভাবনাকে, অহিংসা ও প্রেমের ধারাকে ধারণ করে চলছে। আর ওরা তা চায় না। ওরা জানে নেহরুজিকে আক্রমণ করা মানে ভারতের বহুত্ববাদী মিশ্র সংস্কৃতির চেতনাকে আক্রমণ করা। তাই ওরা সেই কাজ করে চলছে।
ওরা সব জায়গা থেকে পণ্ডিত নেহরুর নাম মুছে দিতে চাইছে। ওদের উদ্দেশে বলি, দেশের IIT গুলো, মেডিক্যাল কলেজগুলো, গবেষণা কেন্দ্রগুলো, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো, সমস্ত প্রগতির চিহ্নগুলো ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলেও সেখান থেকে যে ধূলিকণা উড়বে তার প্রতিটি অণু পরমাণুতেও দেখবেন পন্ডিত নেহরুর চেতনা ও দর্শন!