নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব মেদিনীপুর, ২৫ নভেম্বরঃ
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জনস্বার্থে জেলা শাসকের দপ্তরে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মানস করমহাপাত্র, সহ সভাপতি মদনমোহন জানা, সম্পাদক সুকুমার পট্টনায়ক, জয়ন্ত চৌধুরী, বিশ্বরঞ্জন মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ মৃত্যুঞ্জয় ভট্টাচার্য্য, হলদিয়া ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি আজাদ আলী শেখ, জেলা সেবাদলের চেয়ারম্যান সেখ জাফরুল্লাহ প্রমূখ। এ ডি এম (জেনারেল) শৌভিক চট্টোপাধ্যায় ডেপুটেশন গ্রহণ করেন এবং দাবিপূরণে সচেষ্ট হওয়ার আশ্বাস দেন। স্মারকলিপিতে নীচের দাবীগুলি উল্লেখ করা হয়ঃ
ক) ভূমি বন্টন :*পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার জমি পাট্টা (লিজ) ও নতুন রেকর্ড (ROR) বিতরণে একটি স্বচ্ছ ব্যবস্থা থাকতে হবে;
১) ভূমিহীনদের পাট্টা দেওয়ার সরকারি নির্দেশ সবাইকে জানাতে হবে।
২) ভূমি সম্পদ বণ্টনের সময় ভূমিহীন, SC এবং ST-এর জন্য জোরালো অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৩) পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অর্পিত জমির গ্রামভিত্তিক বিশদ তালিকা। প্রকাশ করতে হবে।
৪) বিতরণ করা জমি বিক্রয়যোগ্য কি না এবং
৫) জমির মালিকদের দেওয়া ক্ষতিপূরণের পরিমাণ।
৬) মোট অর্পিত জমি তার নিষ্পত্তি, মোকদ্দমামুক্ত কিনা।
৭) মোকদ্দমায় কত একর অর্পিত জমি।
৮) এই ধরনের দখল এবং ন্যস্ত করার সত্যতা অবিলম্বে সরকারী গেজেটে সরকার কর্তৃক অবহিত করা উচিত।ভূমি সংস্কার নীতি, আইন এবং বাস্তবায়ন পরিস্থিতি-নির্দিষ্ট হতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ ভূমি সংস্কার আইনে যথাযথ ক্ষতিপূরণের বিধান না থাকলে সরকার কোনও জমি দিতে পারে না।এমতাবস্থায়, সরকারি গেজেট ছাড়াই জমি পাট্টা বণ্টন, গ্রাম পর্যায়ের শুনানি বা গ্রামীণ এলাকায় সর্বদলীয় সভা বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, ফলে সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে। আমরা আশা করি প্রশাসন সম্ভাব্য পরিস্থিতি বিবেচনা করে একটি ব্যাপক ও সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেবে।*
খ) পঞ্চায়েত নির্বাচন:*
১) অবাধ ও নিরপেক্ষ পঞ্চায়েত নির্বাচনের স্বার্থে প্রশাসন ও পুলিশকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে।
২) অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে।গোটা রাজ্যে যেভাবে বোমা ও বন্দুক পাওয়া যাচ্ছে তা স্পষ্টতই পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাসে পরিস্থিতির দিকের ইঙ্গিত দেয়। ভোট মানে পশ্চিমবঙ্গে আরও গোলাগুলি, আরও সহিংসতা। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সাংবিধানিক সংস্থা হলেও নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে। সুপ্রিম কোর্টে ভারতের নির্বাচন কমিশনের কৌঁসুলির সাম্প্রতিকতম মন্তব্য (“ভোটের অধিকার একটি নিছক বিধিবদ্ধ অধিকার এবং সাংবিধানিক অধিকার নয়”) উদ্বেগের বিষয়। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতা এবং প্রায় ২০টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত নির্বাচন ২০২৩ এর দ্বারপ্রান্তে৷ রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে রাজনৈতিক উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে।*
গ). পানীয় জল সরবরাহ:*
১) জেলার সমস্ত পরিবারকে পাইপযুক্ত পানীয় জলের সরবরাহ করতে হবে।
২) যেখানে পাইপ দিয়ে পানীয় জল পাওয়া যায়, সেখানে দিনে তিনবার পানীয় জল দিতে হবে।
৩) জেলার সকল অকেজো নলকূপ মেরামত করতে হবে।
*ঘ). রাস্তা:*
১) জরাজীর্ণ মোরাম, পীচ ও কংক্রিটের রাস্তা পুনর্নির্মাণ করা দরকার।
২) নির্মাণাধীন এগরা-হরিপুর সড়কে বিটুমিনের অভাবে জনসাধারণকে অতি কষ্টে যাতায়াত করতে হয়। অবিলম্বে এ সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে।
৩) জেলার প্রায় সব মোরাম-সড়কই কাঁচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। সেই রাস্তাগুলি সরানো বা কংক্রিট/পীচ রাস্তায় রূপান্তর করা দরকার।
৪) ক্ষতিগ্রস্ত এগরা-বেলদা সড়ক (SH) পুনঃনির্মাণ করা জরুরী।
*ঙ) নিষ্কাশন:*
১) পৌর ও পঞ্চায়েত এলাকার কাঁচা পানির ড্রেন সংস্কার করতে হবে।
২) শহর, বাজার এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কাঁচা নিষ্কাশন নালাগুলি কংক্রিটের তৈরি করা উচিত।
৩) কংক্রিট ড্রেন প্রতিদিন পরিষ্কার করা উচিত।
*চ) বাড়ি নির্মাণ প্রকল্প:*
১) “নিজ ভূমি নিজ গৃহ” প্রকল্পের অধীনে, এগরা পৌরসভার অন্তর্গত সমস্ত ভূমিহীন/গৃহহীন ব্যক্তিদের নামে অবিলম্বে জমি এবং বাড়ি বরাদ্দ করা উচিত।
২) এই প্রকল্পের অধীনে অনুমোদিত সুবিধাভোগীদের অবিলম্বে জমি এবং বাড়ি প্রদান করা উচিত।
৩) সঠিকভাবে এবং নিরপেক্ষভাবে “সবার জন্য ঘর” প্রকল্প বাস্তবায়ন করা উচিত।
*ছ) ট্রাফিক কন্ট্রোল:*
১) পৌর এলাকায় যানজটের সমস্যা সমাধানে স্থায়ী ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
২)এগরায় বাইপাস সড়ক নির্মাণের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩) সমস্ত জনবহুল এলাকার রাস্তায় HYMAS স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা উচিত।
*জ) স্বাস্থ্য পরিচর্যা:*
১) সব হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
২) আয়ুশের সমস্ত বিভাগগুলির উন্নয়ন করা দরকার৷
৩) জেলার সব সুপার স্পেশালিটি ও মহকুমা হাসপাতালে সিটি স্ক্যান, ডায়ালাইসিস চালু করতে হবে।
৪) সমস্ত PHC থেকে পূর্ণ মাত্রায় পরিষেবা দিতে হবে।
৫) RBSK-এর পরিকাঠামো উন্নয়ন করা দরকার।
৬) Health Wealth কেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়ন করে পূর্ণ মাত্রায় পরিষেবা দিতে হবে।
৭) এমটি ল্যাবের ক্ষেত্রে টিবি, আইসিটিসি, ক্যান্সার ইত্যাদির নমুনা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করা দরকার।
৮) এএফপি রিপোর্ট সঠিকভাবে বিতরণ করা উচিত।
৯) “নিশ্চয় জান” প্রকল্পটি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।