সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত পশ্চিমবঙ্গে চার দিনের সফরকে কেন্দ্র করে উঠে আসা এই তথ্য বাংলার শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের কাছে যথেষ্ট আশঙ্কার বলেই ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। সঙ্ঘ চালক মোহন ভাগবতের চারদিনের পশ্চিমবঙ্গ সফরে একাধিক কর্মসূচীতে যোগ দেবেন বলে সূত্রের খবর। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়ারিতে RSS- এর বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির এর মধ্যে অন্যতম। এই প্রশিক্ষণ শিবির তিন সপ্তাহ ধরে চলবে বলেই খবর।
উল্লেখ্য ২০১৩ সালে পশ্চিমবঙ্গে সঙ্ঘের শাখা ছিলো ৭৫০ টির মতো যার সংখ্যা এখন প্রায় ১৯০০ ছাড়িয়ে গেছে বলেই খবর। তথ্য অনুযায়ী সারা দেশে যেখানে RSS- এর বৃদ্ধির হার ৪০ শতাংশের মতো, তা পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৪৮ শতাংশ। এই মুহূর্তে রাজ্যে আর এস এসের সেবা কেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬০০ এবং ‘সরস্বতী শিশু মন্দির’ নামে তাদের স্কুলের সংখ্যাও ১২০০ র ওপরে। এই স্কুল গুলিতে দেশপ্রেমের নামে উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রচার এবং বিভেদকামী দর্শন প্রচার হয় বলেই অভিযোগ আছে। এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা-নেত্রীদের এবং স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর মুখে বিজেপির বিরুদ্ধে কথা শোনা গেলেও আজ পর্যন্ত RSS-. এর বিরুদ্ধে কোন কথা সেভাবে শোনা যায়নি। RSS বিরোধিতা বাদ দিয়ে বিজেপি বিরোধিতার ধারণা স্রেফ সোনার পাথরবাটির মতোই।
ভাগবতের পশ্চিমবঙ্গ সফরে নাকি বাংলার মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ভাগবতকে ফল-মিস্টি পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমগুলির খবর। ফল-মিস্টি পাঠানো খুব একটা বড় খবর নয়; বড় খবর এটাই যে, গত বিধানসভা নির্বাচনে যেখানে যে রাজ্যের মানুষ বিজেপি – কে নির্বাচনে হারালেন সেই রাজ্যে সঙ্ঘ প্রধানের চারদিনের এই সফর এবং তিন সপ্তাহ ধরে প্রশিক্ষণ শিবিরের কর্মসূচী কি রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ নয়?
তা’লে কি RSS- এর কাছে পশ্চিমবঙ্গ এই মুহূর্তে রাজনৈতিক ভাবে সব থেকে নিরাপদ স্থান? পশ্চিমবঙ্গে কেন তৃণমূল আমলেই RSS এর এই বাড়বাড়ন্ত? আরো বড় প্রশ্ন –গত বিধানসভা নির্বাচনে BJP হারলেও, RSS – এর বিচারধারা অক্সিজেন পেয়েই চলেছে ; RSS তাই আরো ফুলে ফেঁপে উঠছে? তা’হলে গত বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে জিতলো কারা?