নিজস্ব সংবাদদাতা, পুরুলিয়া ; ৪ঠা জুলাই:
শিক্ষা-স্বার্থে দলমত নির্বিশেষে মানুষ অহিংস – শান্তিপূর্ণ বনধ পালন করছেন, এমন অবাক করা দৃশ্য বাংলা শেষ কবে দেখেছে, তা নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা আলোচনা চলতেই পারে।
স্কুলগুলিতে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা কোথাও ১১০০, কোথাও ১৯০০, কোথাও ২০০০ এরও ওপরে; কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা সেখানে কোথাও ২ জন, কোথাও ৬ জন, কোথাও আবার ৮ জন। বাঘমুন্ডি ব্লকের বারো-তেরোটি হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের বেহাল দশা এমনই। আবার এই ব্লকের মুকরুব জুনিয়র হাই স্কুল এবং মাউনিয়া আপার প্রাইমারির মতো স্কুলেতো কোনো শিক্ষক – শিক্ষিকাই নেই। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাবে বাঘমুন্ডি ব্লকের বহু হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পঠন-পাঠন প্রায় বন্ধের মুখে। এরই প্রতিবাদে আজকের বনধের ডাক দিয়েছে বাঘমুন্ডি ব্লক কংগ্রেস কমিটি। বাঘমুন্ডি ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি হরেন্দ্র নাথ সিং বাবু একটি প্রচারপত্রে ব্লকের স্কুলগুলির এই বেহাল দশার প্রতিবাদে শিক্ষানুরাগী সমস্ত মানুষকে এই বনধে সামিল হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন। জরুরি ও অত্যাবশকীয় পরিষেবাগুলিকে বনধের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস কমিটির সভাপতি তথা প্রাক্তন বিধায়ক নেপাল মাহাত জানিয়েছেন যে, মানুষ যখন একজোট হয়ে প্রতিবাদ করেন তখন কোনো অশুভ শক্তি তাকে দমাতে পারেনা, বাঘমুন্ডিতে আজকের বনধ তারই প্রমাণ বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। উল্লেখ্য নেপাল বাবু র আরো একটি পরিচয় এই যে তিনি দীর্ঘ দিন শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত থেকে শিক্ষক আন্দোলনেরও নেতৃত্ব দিয়েছেন। নেপাল মাহাত আরো অভিযোগ করেছেন যে, কেবল বাঘমুন্ডি নয় সমস্ত পুরুলিয়া জেলাতেই শিক্ষক শিক্ষিকার অভাবে স্কুলগুলিতে পঠন-পাঠন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মুখে। রাজ্য সরকারের ভুলনীতি এবং শিক্ষক-বদলিতে ব্যাপক দুর্নীতির ফলে স্কুলগুলিতে ছাত্র – ছাত্রীর সংখ্যার অনুপাতে শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যার অনুপাত তলানিতে এসে পৌঁছেছে বলেও এদিন উল্লেখ করেন প্রাক্তন বিধায়ক নেপাল মাহাত। অহিংস ও শান্তিপূর্ণ বনধ পালনের জন্য বাঘমুন্ডির সর্বস্তরের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে নেপাল বাবু আরো বলেন যে, আগামী দিনে শিক্ষার স্বার্থে এই আন্দোলনকে সমস্ত পুরুলিয়া জেলাতেই ছড়িয়ে দেওয়া হবে।