–
—মুকুল বসাকের প্রতিবেদন; কোলকাতা,২০শে মেঃ
মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীকে শিক্ষকতার চাকুরী থেকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছে কোলকাতা হাইকোর্ট। এ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী বলেন যে, “এ তো হিমশৈলের একটা চূড়ামাত্র , ভালো করে খুঁজলে তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের ঘরে ঘরে এমন দুর্নীতির সন্ধান মিলবে।”
স্কুল সার্ভিস কমিশন নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় কিছুদিন পূর্বেই নাম জড়িয়েছিল রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী এবং তাঁর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর নাম। মেয়েকে বেআইনিভাবে চাকরিতে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। এরপর এই মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে ওঠে এবং এদিন সেই শুনানিতে অঙ্কিতাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়ে বলেন, “এতদিন পর্যন্ত পাওয়া সমস্ত বেতন অঙ্কিতাকে ফেরত দিতে হবে।” এ বিষয়ে তাকে দুটি কিস্তিতে টাকা ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
সম্প্রতি, ববিতা সরকার নামের এক এস.এস.সি পরীক্ষার্থী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাকারিণীর অভিযোগ, বাবা মন্ত্রী হওয়ার কারণে অঙ্কিতাকে প্রভাব খাটিয়ে বেআইনিভাবে চাকরিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়! এদিন এই মামলার শুনানিতে রায় ঘোষণা করার সময় বিচারপতি জানান যে, এবার থেকে নিজেকে শিক্ষক হিসেবে দাবি করতে পারবে না অঙ্কিতা অধিকারী। এমনকি স্কুলেও ঢুকতে পারবে না সে। এরপরেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ” ৭’ই জুন ও ৭’ ই জুলাই দুটি কিস্তির মাধ্যমে মোট ৪১ মাসের বেতন ফেরত দিতে হবে অঙ্কিতাকে।”
অভিযোগ, ২০১৭ সালের এসএসসিতে প্রথম মেধা তালিকার ২০ জনের মধ্যে নাম না থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয় তালিকায় আচমকাই নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয় অঙ্কিতার। এক্ষেত্রে, ববিতা সরকারের নাম প্রথম লিস্টে থাকলেও তাকে দ্বিতীয় তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলা হয়।
এরপর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ববিতা জানান, “আমার প্রাপ্ত নম্বর ৭৭ হওয়া সত্ত্বেও আমাকে বাদ দিয়ে মাত্র ৬১ নম্বরেই সুযোগ দেওয়া হয় মন্ত্রী-কন্যাকে।” আর এর পরেই এদিনের শুনানিতে অঙ্কিতাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিলো কলকাতা হাইকোর্ট।
এদিকে হাইকোর্টের এই নির্দেশের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জ্ঞাপন করে অধীর বাবু বলেন যে, ইদানীং কালে যেভাবে কোলকাতা হাইকোর্ট বঞ্চিত মানুষদের অধিকার ফিরিয়ে দেবার উদ্যোগ গ্রহণ করছেন তাতে আইন-বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা দৃঢ় হচ্ছে।