চন্দন ঘোষচৌধুরী
গতকাল, ১২ই ফেব্রুয়ারি ২০২২ , এলাহাবাদ হাই কোর্টের দুই সদস্যের লখনৌ বেঞ্চ তীব্র ভর্ৎসনা করেন অযোধ্যার বিজেপি নেতা ও মিডিয়া সেলের সদস্য রজনীশ সিংহকে।তিনি একটি জনস্বার্থ মামলা করে বলতে চেয়েছিলেন তাজমহল আসলে তেজো মহালয়া নামে এক প্রাচীন শিবমন্দির ও তাজমহলের কাঠামোয় যে ২২ টি ঘর তালাবন্ধ হয়ে রয়েছে সেখানে হিন্দু বিগ্রহ অবস্থান করছে। আদালতের কাছে তাঁর দাবী , দেশের পুরাতত্ব বিভাগ (Archeological Survey of India) এর তদন্ত করুক।
বিচারপতি শ্রী দেবেন্দ্রকুমার উপাধ্যায় ও সুভাষ বিদ্যার্থী মামলাকারীকে তীব্র ভর্ৎসনা করে বলেন , আদালত মজার জায়গা নয়। বিচারপতিদ্বয় এর পর যোগ করেন, মামলাকারীর আগে ইতিহাসে MA করে National Eligibility Test ( NET) পাশ করে Junior Research Fellowship নিয়ে যদি এরূপ বিষয়ে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুযোগ না দেয় , তাহলে আদালতে আসতে পারেন।আদালত এটাও পর্যবেক্ষণ করেন যে এইধরনের মামলা শুধু সংবাদ মাধ্যমে প্রচারের জন্য। মামলাযোগ্যই নয়।
বারাণসীর জ্ঞানবাপী ও মথুরার ইদাঘ মসজিদকে ঘিরেও এমন জনস্বার্থ মামলা হয়েছে । এই দুটি মামলাও এলাহাবাদ হাই কোর্টে শুনানি চলছে।
“ধর্মের রাজনীতি করছে কেন্দ্রের শাসক দল”, জাতীয় কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সূর্যেওয়ালা একথা বলেন। তিনি আরও বলেন” বিজেপি ও আর এস এস দেশকে ধর্মের নামে ভাগ করবার চক্রান্ত করছে , এটা একটা চরম হানিকর দেশের সংবিধানের পক্ষে। এটা বৈষম্যের বীজ বপন। কে কি খাবে, পরবে, লাউড স্পিকার ব্যবহার, বুলডোজার ব্যবহার, মন্দির, মসজিদ, চার্চ, গুরুদ্বার,সব বিষয়ে বিজেপির শুধু রাজনীতি”।প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালেই পুরাতত্ব বিভাগ বা ASI আগ্রা কোর্টে এক মামলায় জানিয়েছিল, তাজমহলে কোনো প্রকার মুঘলদের দ্বারা হিন্দু মন্দির উৎপাঠন করা হয় নি। ASI তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণ দায়িত্বপ্রাপ্ত।উল্লেখ্য কয়েকদিন আগে হিন্দুত্ববাদীরা দিল্লীতে কুতুবমিনারের নাম পাল্টে বিষ্ণুস্তম্ভ রাখার দাবী করে অবস্থান কর্মসূচি সংগঠিত করেছিল। এমনকি কাশী ও মথুরা থেকে মুসলীম ধর্মস্থান উঠিয়ে দিতে গেরুয়া শিবির উঠেপড়ে লেগেছে কদিন ধরে।