নিজস্ব প্রতিবেদন, ৭ সেপ্টেম্বরঃ
তামিলনাড়ুর অকংগ্রেসী মুখ্যমন্ত্রী এম.কে.স্টালিন যখন ভারতের জাতীয় পতাকা তুলে দিলেন রাহুল গান্ধীর হাতে কিম্বা মঞ্চের উপর যখন প্রথিতযশা সমাজকর্মী যোগেন্দ্র যাদবের ঘোষণা অনুযায়ী তাঁর সঙ্গীরা রাহুল গান্ধীর হাতে সৌভ্রাতৃত্বের রাখি পরিয়ে দিলেন, সেই মুহূর্তে কন্যাকুমারীর বুক থেকে আক্ষরিক অর্থেই বুধবার শুরু হয়ে গেলো ভারত জোড়ো যাত্রা।
১৪৮ দিনে ১২ টা রাজ্য এবং ২ টো কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে এই পদযাত্রা সম্পন্ন করবেন রাহুল গান্ধী। পুরো পদযাত্রায় কোনো গাড়িঘোড়া থাকবেই না যেমন তেমনই পদযাত্রীরা কোনো হোটেলে রাত্রিবাস করবেন না। যে জনপদে দিনের যাত্রা শেষ হবে সেখানেই সাধারণ মানুষের অতিথি হবেন তাঁরা। পদযাত্রার মাঝে বিশ্রামের দিনগুলোতে বিভিন্ন জনপদে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আক্ষরিক অর্থেই কথোপকথন চালাবেন রাহুল গান্ধী, থাকবে প্রার্থনা সভাও। ঠিক যেভাবে মহাত্মা গান্ধী ডান্ডি অভিযান কিম্বা নোয়াখালীর পদযাত্রা করেছিলেন, সেই আদলেই প্রায় শতাব্দী অতিক্রম করে রাহুল গান্ধী পদযাত্রা করতে চলেছেন।
বুধবার সকালে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরামবুদুরে প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর শাহাদাত বরণ স্থলে প্রার্থনা সভায় যোগ দিয়ে, শ্রদ্ধা নিবেদন করে কণ্যাকুমারীর উদ্দেশে রওনা দেন রাহুল। সেখানে পৌঁছে বিবেকানন্দ রকে স্বামীজীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। তারপর বিখ্যাত তামিল কবি থিরাভাললৃলর এর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে সোজা পৌঁছে যান গান্ধী আশ্রমে। সেখানে প্রার্থনা সভায় যোগ দিয়ে গান্ধী মন্ডপমের সামনে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে হাজির হন রাহুল।
পুরো অনুষ্ঠানে কোথাও কংগ্রেসের দলীয় পতাকা চোখে পড়েনি কারো। বরং পতপত করে উড়ছিলো ভারতের তেরঙ্গা জাতীয় পতাকা সারি সারি। রাহুল তাঁর বক্তব্যে বলেন, এই তেরঙ্গা পতাকার উপর অধিকার আছে এদেশে বসবাসকারী জাতি-ধর্ম-ভাষা-লিঙ্গ নির্বিশেষে প্রত্যেক মানুষের। এই পতাকা কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। নিজের স্বভাব সিদ্ধ ভঙ্গিতেই এদিন রাহুল গান্ধী বিজেপি ও RSS কে নিশানা করে বলেন,” ভারতের জাতীয় পতাকার মূল নির্যাসকে ধ্বংস করতে চাইছে ওরা।” দেশে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি, বেড়ে চলা বেকারত্ব, বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে জনমত গঠন করাই যে এই ভারত জোড়ো যাত্রা’ র মূল লক্ষ, তা এদিন নিজের বক্তব্যে স্পষ্ট করে দেন রাহুল গান্ধী।