সৌমক পালিত:
আজকের যে ডিজিটাল ভারত-এর বাগাড়ম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে শোনা যায়, ভারতবর্ষের বুকে তার সূতিকাগার সৃষ্টি করেছিলেন যে মানুষটা তাঁর নাম রাজীব গান্ধী।
১৯৮৭ সালে, তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী স্যাম পিত্রোদাকে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় প্রযুক্তি মিশনের উপদেষ্টা নিযুক্ত করেন। একসাথে, পিত্রোদা এবং রাজীব গান্ধী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে এই মিশনগুলি ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে গুরুত্ব আরোপ করে কাজ করবেঃ১)পানীয় জল, ২)টিকাদান, ৩)সাক্ষরতা, ৪)তৈল বীজ, ৫)টেলিযোগাযোগ এবং ৬)দুগ্ধ উৎপাদন।
মিশনের লক্ষ্য ছিল ১,00,000 গ্রামে জনপ্রতি ৪0 লিটার এবং গবাদি পশুর মাথাপিছু দিনে ৩০ লিটার পরিমাণে বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ করা।
দুগ্ধ মিশনের লক্ষ ছিল প্রজনন, পশু স্বাস্থ্য, পশুখাদ্য এবং দুধ উৎপাদনের উন্নতির জন্য প্রযুক্তির বিকাশ এবং বাস্তবায়ন করা।
ভারতে টেলিকম উন্নয়নের সরকারী লক্ষ ছিল আদিবাসী উন্নয়ন, স্থানীয় তরুণ প্রতিভা বিকাশ, গ্রামীণ টেলিকম, ডিজিটাল সুইচিং নেটওয়ার্ক, স্থানীয় উৎপাদন।
ইমিউনাইজেশনের বিষয়ে, শীর্ষ টিকা বিশেষজ্ঞরা ওরাল ভ্যাকসিন শুরু করেন। তাঁরা ভারতের সমস্ত অংশে রেফ্রিজারেশন পাওয়ার জন্য শিল্পবিদদের সাথে একযোগে সমন্বয় করে ভ্যাকসিনগুলি পরিচালনা করার জন্য একটি কোল্ড চেইন তৈরি করেছিলেন।
এই উদ্যোগের জন্য, ২৫ বছর পরে ২০১৩ সালে ভারতবর্ষ পোলিও মুক্ত হয়।
রাজীব গান্ধীর শক্তিশালী টেকনোলজি মিশন প্ল্যানের কারণে এগুলি সম্ভব হয়েছিলো। এর পিছনে ছিলো কংগ্রেসের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গী সমন্বিত ইতিবাচক পরিকল্পনা এবং পদক্ষেপ; যার অভাব আজকের সময়ে লক্ষণীয়। দুর্ভাগ্যের বিষয় আজকের কেন্দ্রীয় সরকার ঘটা করে জাতীয় প্রযুক্তি দিবস পালন করলেও, সেখানে সরকারের উপযুক্ত পরিকাঠামো, সদিচ্ছা এবং বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টিভঙ্গীর অভাব আমাদের কয়েক ধাপ পিছিয়ে দিচ্ছে।