অশোক ভট্টাচার্যের বিশেষ প্রতিবেদন, ২ রা আগস্টঃ
বাঙালির বিজ্ঞাণ চেতনার সঙ্গে দেশিয় শিল্পোদ্যোগকে মিলিয়ে দেশের মানুষের স্বাধীন অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়া ছিলো তাঁর লক্ষ। সেই পথে হেঁটেই আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস লিমিটেড’। সংক্ষেপে যা BCPL। সেই বিসিপিল ই আজ আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্রের জন্মদিনে দাঁড়িয়ে অপমৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। কিন্তু কেন? বিসিপিএল তো – কোনো ধুঁকতে থাকা রুগ্ন সংস্থা নয়। ২০১৬-১৭ সালে সংস্থাটি প্রায় ৪ লক্ষ মার্কিন ডলার আয় করেছিলো। ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে সংস্থাটির মোট আয় ১০০.৫ কোটি টাকা এবং নীট আয় ২৫.২৬ কোটি টাকা। এরপরেও ভারত সরকারের এই সংস্থাটিকে বিক্রি পথে ঠেলে দিতে চাইছে খোদ কেন্দ্রীয় সরকার। এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক এবং আইনি লড়াই লড়ছেন বেঙ্গল কেমিক্যাল-এর কর্মচারীরা।
এই লড়াইয়ে যেমন আছে INTUC র মতো কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন, তেমন আছে CITU ও। বেঙ্গল কেমিক্যাল এর INTUC শ্রমিক সংগঠনের ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি দিব্যেন্দু মিত্র জানিয়েছেন যে, একমাত্র তৃণমূলের INTTUC ছাড়া আর সব সংগঠনই বেঙ্গল কেমিক্যাল বাঁচানোর লড়াইয়ে নেমেছে। INTUC ইউনিয়নের সহ-সভাপতি দীপায়ন ঘোষের কথা অনুযায়ী, ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় সরকার এই বি সি পি এল-এর পানিহাটির জমি বিক্রির কথা ঘোষণা করে। তার প্রতিবাদে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে আপিল করে শ্রমিক সংগঠনগুলো। সিঙ্গেল বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকারের ওই বিক্রির সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ দান করলে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করা হয়। সেই আইনি লড়াই আজও চলছে। এর মধ্যে ২০১৭ সালে আবার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে এই বিক্রির কাজ কতদূর এগুলো, তার তদ্বির করা হয়। বি পি সি এল- এর INTUC ইউনিয়নের সভাপতি তথা রাজ্য INTUC এর রাজ্য সভাপতি কামরুজ্জামান কামারের সঙ্গে এই ব্যাপারে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করলে তিনি সখেদে বলেন, মোদি সরকার মুখে বলছে আত্মনির্ভর ভারত গড়ার কথা আর কাজে করছে ঠিক উল্টো। যে সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় সেই বি সি পি এল- এর মতো লাভজনক সরকারি সংস্থা বিক্রি করার মোদি সরকারের চক্রান্ত বাঙালি কখনো মুখ বুজে মেনে নেবেনা বলেও তিনি জানান।