নিজস্ব প্রতিবেদন, ২ রা অগাস্টঃ
১লা আগষ্ট সোমবার রাজ্যে আরও ৭টি নতুন জেলা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান দক্ষিণবঙ্গের ৩টি জেলা ভেঙে হবে এই ৭টি জেলা। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা ভেঙে হবে সুন্দরবন জেলা। ইতিমধ্যে সুন্দরবন পুলিশ জেলা বিভাজন হয়েছে। এর জেলা সদর হতে চলেছে কাকদ্বীপ। এছাড়া উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ভেঙে হতে চলেছে ইছামতি ও বসিরহাট জেলা। ইছামতি জেলার জেলাসদর হতে চলেছে বনগাঁ। এছাড়া নদিয়া জেলা ভেঙে হতে চলেছে রানাঘাট জেলা। মুর্শিদাবাদ জেলা ভেঙে হতে চলেছে কান্দি ও বহরমপুর জেলা। বাঁকুড়া জেলা ভেঙে হতে চলেছে বিষ্ণুপুর জেলা। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রশাসনিক কাজে সুবিধার জন্য এই পদক্ষেপ করেছে সরকার। বিরোধীদের দাবি, ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জেলা ভাগ ও পুলিশ কমিশনারেট গঠন করে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এতে সাধারণ মানুষের বিন্দুমাত্র উপকার হয়নি।এই ঘোষণার পর থেকেই বিরোধীরা দাবী করছে, নিজের দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ সামলাতে একের পর এক জেলা গঠন করছেন মমতা। সঙ্গে এর জেরে রাজ্যে পুলিশের শাসন কায়েম রাখতে সুবিধা হচ্ছে তাঁর। অন্য জেলা ভাগ নিয়ে সাধারণ মানুষের তেমন প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও মুর্শিদাবাদ জেলা ভেঙে “বহরমপুর ও কান্দি” জেলা গঠন নিয়ে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে মুর্শিদাবাদের সাধারণ মানুষের মধ্যে। সারাদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়াতে এই নিয়ে প্রতিবাদ দেখা গেছে মুর্শিদাবাদবাসীর। তাদের বক্তব্য “মুর্শিদাবাদের মতো একটা ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী জেলার বাসিন্দা হিসাবে আমরা গর্ব বোধ করি। জেলা ভাঙা হোক কিন্তুু সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ নাম মোছা চলেবে না। পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর বা উত্তর-দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো আমাদের জেলার নামের সাথে এই শব্দগুলো জুড়ে জেলা ভাঙা হোক।” এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ শ্রী অধীর রঞ্জন চৌধুরী মহাশয় বলেন “মুর্শিদাবাদ শুধুমাত্র একটা জেলার নাম নয়, একটা ঐতিহাসিক ভূখণ্ডের নাম মুর্শিদাবাদ। এই মুর্শিদাবাদ একসময় ছিলো বাংলা-বিহার-ওড়িশার রাজধানী।মুর্শিদ কুলি খাঁর নামে নামাঙ্কিত এই মুর্শিদাবাদ জেলা। সেই মুর্শিদাবাদ জেলা কে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ তিন টুকরো করে দিতে চাইছেন, যেখানে মুর্শিদাবাদ নামটাই থাকবে কি না আমাদের জানা নেই। প্রশাসনিক কাজের জন্য জেলা ভাঙা যেতেই পারে, কিন্তুু মুর্শিদাবাদ নামটাই কেন মুছে দেওয়া হচ্ছে? মুর্শিদাবাদের সাথে পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ জুড়ে দেওয়া হোক তাতে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তুু মুর্শিদাবাদ নামটা প্রত্যাহার করে নিলে মুর্শিদাবাদ জেলার সর্বস্তরের মানুষ এর প্রতিবাদ করবে এবং আমাদের যতদূর যেতে হয় আমরা যাবো। কারণ মুর্শিদাবাদ জেলার সাথে আমাদের পরিচয় জড়িত।”
(ছবি:- ফাইল থেকে সংগৃহীত)