মানস ব্যানার্জী
চলতি কা নাম গাড়ি সিনেমায় একটা বিখ্যাত গান ছিল, “যাতে থে জাপান, পৌহুছ গায়ে চীন…সমঝ গ্যায়ে না!” ২০২৩-২৪ বাজেটে সেইটাই হলো।
দেশের মানুষের চাহিদার অভাব মেটাতে দরকার ছিল GDP-র অনুপাতে সরকারি ব্যায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করা। আর আদতে নির্মলা আন্টির হাঁটলেন ঠিক উল্টো দিকে। গতবারের আনুপাতিক হার ১৫.৩% থেকে কমে হলো ১৪.৯%।
১) Mgnrega যোজনার ব্যায়বরাদ্দ কমে গেল ৩৩%।২) খাদ্যে ভর্তুকি কমলো ৩১%।৩) সারে ভর্তুকি কমলো ২২%৪) রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি কমলো ৭৫%।৫) শিক্ষা খাতে বরাদ্দ হ্রাস ৪৪০০ কোটি টাকা।৬) স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ হ্রাস ৯২৫০ কোটি টাকা।
অর্থাৎ, এই বাজেট গ্ৰামীন কর্মসংস্থানের দফারফা করে দিয়ে, খাদ্য – সার – LPG Cylinder -এর ভর্তুকি কমিয়ে দিয়ে ও শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমিয়ে দেশের খেটে খাওয়া মানুষ ও আগামী প্রজন্মের সাড়ে সর্বনাশ করে ছাড়লো।
তাহলে আন্টি গেলেন কোন পথে?
১) ধর্মপিতার দুই ধর্মপুত্র আদানি ও আম্বানি দের জন্য আর বৈদেশিক মূলধন আনার জন্য মূলধনী খাতে বরাদ্দ বাড়ালেন যা শুধুমাত্রই বাহ্যিক পরিকাঠামোর উন্নয়ন ঘটাবে। বেসরকারি লগ্নির “Crowding In” হবে। যা আগের বারও চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু লাভ হয় নি একচুলও।
২) কমিয়ে দিলেন আয়করের ওপর সারচার্জ। যাতে খুব বেশি হলে দেশের ৭-৮ শতাংশ মানুষ খুশি হতে পারে। বাকি ৯০% মানুষ এই সব কিছু বুঝবেই না।
যখন বাজারে ক্রয়ক্ষমতা কম, বেসরকারি লগ্নি এতো হাতছানির পরও দুরাবস্থায়, চালু খাতে ঘাটতির পরিমাণ ক্রমবর্ধমান তখন Expansionary Fiscal Policy বা প্রসারণমুখী আর্থিক নীতি-ই হলো দেশের অর্থব্যবস্থার স্বাস্থোদ্ধারের পরিচিত নীতি। কিন্তু ধর্মপুত্রদের জন্য সব বলিদান দিয়ে আন্টি গেলেন রং-রুট এর দিকে।
এই বাজেট দেশের বেকার জনগোষ্ঠী, দরিদ্র ও বিপন্ন মানুষ, কৃষক ও শ্রমিক দের অবস্থা আরও বেশি করে খাদের কিনারায় নিয়ে চলে গেল। শুধু ঝুপ করে পড়ে গিয়ে খাদের তলানিতে তলিয়ে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা মাত্র।