— পলাশ ভান্ডারীঃ
দেশ তথা রাজ্যের শাসকগণের দেউলিয়া অবস্থা এবং কৃতিত্ত্ব দাবীর উলঙ্গ প্রচেষ্টা দেখে, একজন ভারতবর্ষের নাগরিক তথা বঙ্গবাসী এবং হাওড়া জেলার মানুষ হিসাবে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।
সঠিক ও সত্য ঘটনাক্রম এবং ইতিহাসকে বিকৃত করার কি আপ্রাণ অপচেষ্টা!একটু পিছিয়ে যেতে হবে।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা হাওড়ার প্রাক্তন সাংসদ এবং হাওড়ার উন্নয়নের প্রাণপুরুষ প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সী একদিন মিটিং শেষে আমাদের বললেন “তোরা হাওড়ার লোক, সল্টলেক স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলা দেখতে যেতে অনেক অসুবিধা ও কষ্টভোগ করিস। আমি হাওড়া থেকে সল্টলেক পর্যন্ত ‘লন্ডনের টেমস নদীর নীচ দিয়ে’ মেট্রোর মতো, হুগলী নদীর নীচ দিয়ে সল্টলেক পর্যন্ত মেট্রো চালানোর জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরী করছি যাতে তোদের এই অসুবিধা দুর হয়।
“তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং -এর সহযোগিতায়, শ্রীমতী সোনিয়া গান্ধীর সহচর্যে এবং তৎকালীন যোজনা আয়োগের ডেপুটি চেয়ারম্যান শ্রী প্রণব মুখার্জীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় ও শ্রী দাশমুন্সীর যথাযোগ্য তদ্বির ও তদারকিতে ধীরে ধীরে এই পরিকল্পনাটি তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার পাশ করে। তখনকার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অবদানও অনস্বীকার্য। আজ পরিকল্পনাটি যখন বাস্তবায়িত হতে চলেছে তখন পরিকল্পনা গ্রহনের সময় যাদের কোনও ভূমিকা তো কোন ছার নিজেদের সরকারিভাবে রাজনৈতিক অস্তিত্বই ছিলনা তারা কৃতিত্ত্বের নগ্ন দাবীদার হওয়ার প্রচেষ্টায় ব্রতী দেখে হাসি চেপে রাখাও কষ্টকর।
সেদিন আজকের কিছু তৃণমূল ও বিজেপি নেতাও আমার সাথে হাওড়া কোর্টের সামনে বঙ্কিম সেতুর নীচ থেকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত মিছিল এবং পরে স্টেশন চত্ত্বরে মিটিং করে শ্রী প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সী এবং শ্রী প্রণব মুখার্জীকে ধন্যবাদ জানান, আজ এই সব দেখে তারাও মুখ টিপে হাসছে।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যায় যে, শ্রী অধীর রঞ্জন চৌধুরী কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচিত হওয়ায় হাওড়ার শরৎ সদনে অনুষ্ঠিত তাঁর সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে হাওড়া জেলার কংগ্রেস কর্মীবৃন্দ হাওড়া মেট্রো স্টেশনের নাম ”প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সীর” নামাঙ্কিত করার আবেদন করেন।
একইভাবে বিগত দিনে কোলকাতায় ১৭ অনুর্ধ্ব ফুটবল বিশ্বকাপ, পঃ বঙ্গে AIIMS -এর ধাঁচে তৈরী হাসপাতাল প্রভৃতি পরিকল্পনা আমাদের প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সীর দূরদর্শিতা ও বাংলার উন্নয়নের প্রকৃষ্ট উদাহরন হিসাবে মানুষের মনের মণিকোটায় চিরবিরাজমান থেকে যাবে।
আজকের কিছু পাতি, সস্তা, অপদার্থ, অকর্মন্য, মুখসর্বস্য রাজনীতিকদের বলতে চাই, যতই চেষ্টা করুন দায়িত্ব নিয়ে চ্যালেঞ্জ নিতে ও নিজের লেখার সমর্থনে প্রমাণপত্র পেশ করতে পারি, সাহস থাকলে চ্যালেঞ্জ গ্রহন করে দেখান। আসলে যতই চেষ্টা করুন আপনারা সারা জীবনেও প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সীর একটি লোমের যোগ্যও হতে পারবেন না।
তাই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি “তিনি এদের শুভবুদ্ধি দিন”। যাতে ভারত তথা পঃ বাংলার মানুষ এই ভয়ংকর অন্ধকার, মিথ্যাচার, প্রবঞ্চনা ও প্রতারনার হাত থেকে রেহাই পায়।
আর মনে রাখবেন, তাদেরও একদিন ইতিহাসের সঙ্গী হতে হবে, সেদিন যদিও কিছু বলার মতো করতে পারেননি, তবুও মিথ্যা দাবী করা কৃতিত্ত্বের স্মৃতি ফলকগুলি মুছে ফেলতে বেশী সময় লাগবে না।
( লেখক হাওড়া জেলা কংগ্রেস কমিটির সভাপতি)