মুকুল বসাকের প্রতিবেদন:
আশঙ্কা পরিণত হল আতঙ্কে। পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফল বেরনোর পর থেকেই লাগাতার বাড়ছে পেট্রল-ডিজেলের দাম। ২২ মার্চ এক লাফে ৫০ টাকা বেড়ে ৯৭৬ টাকা হয়েছিল ১৪.২ কেজি ডোমেস্টিক এলপিজি সিলিন্ডারের দাম। তখন থেকেই আতঙ্কের প্রহর গুনতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। উত্তর প্রদেশ-সহ ৪ রাজ্যে বিপুল জয় পায় বিজেপি। সেদিনই বিজয় সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কথায় ইঙ্গিত মিলেছিল, যে এবার দাম বাড়তে পারে। আজ আবারও ৫০ টাকা সিলিন্ডার পিছু দাম বেড়ে কলকাতায় ১৪.২ কেজি ডোমেস্টিক এলপিজি সিলিন্ডারের দাম দাড়ালো ১০২৬ টাকা।
প্রসঙ্গত ২০১৪ সালে কংগ্রেস সরকারের পরাজয়ের ফলে মনমোহন সিংহ যখন প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি ছাড়েন তখন ভর্তুকি যুক্ত একটি ডোমেস্টিক এলপিজি সিলিন্ডারের জন্য মানুষকে ৪১০.৫০ টাকা দাম দিতে হত। অতিরিক্ত যে টাকা দাম দেওয়া হত তা ব্যাঙ্ক একাউন্টে ফেরত আসতো। ২০১৪ সালে “মেগঙ্গাই মুক্ত ভারত” স্লোগান দিয়ে নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রী হন। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে বাড়ানো হয়েছে ভর্তুকি যুক্ত ডোমেস্টিক এলপিজি সিলিন্ডারের দাম এবং কমানো হয়েছে ভর্তুকির পরিমান। ২০২০ সালে করোনার কারন দেখিয়ে ভর্তুকি প্রায় বন্ধ করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। গত ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন পেট্রোপণ্যে যে ভাবে ভর্তুকি ছাঁটাই করেছেন, তাতে ভর্তুকিহীন ও ভর্তুকিতে পাওয়া সিলিন্ডারের দাম প্রায় একই হয়ে যায়। ভর্তুকি বাবদ ব্যাঙ্কে জমা হয় মাত্র ১৯.৫০ টাকা।
জ্বালানি তেলের দাম প্রায় রোজই বাড়ছে। ভোজ্যতেলের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে বিগত ছয় মাসে। সেই সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। এপ্রিল থেকেই জীবনদায়ী ও জরুরী ওষুধপত্রের দাম বেড়েছে। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মধ্যবিত্তদের। তার মধ্যে আবার রান্নার গ্যাস হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ায় নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষজনের। “মেহেঙ্গাই মুক্ত আচ্ছে দিন”-এর স্বপ্ন কি এখন মানুষের কাছে দুঃস্বপ্নের প্রহসনে পরিণত হয়েছে তা হলে?