শুভাশিস মজুমদার
মধ্যপ্রদেশ ও ছত্রিশগড়, এই দুই রাজ্যের সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনের ফলে কংগ্রেস প্রচণ্ড বহুমত নিয়ে সরকার গঠনের পথে বলে অধিকাংশ রাজনীতি বিশেষজ্ঞ এবং ওই দুটি রাজ্যে নির্বাচনকালে কাজ করা সাংবাদিকদের অভিমত। কংগ্রেস ভাল ফল করতে পারে মিজোরামেও, যেখানে মণিপুরের ঘটনা নিয়ে অপমানিত হওয়ার আশঙ্কায় পূর্ব ঘোষণা সত্বেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওই রাজ্যে তাঁর নির্বাচন প্রচারে যাওয়া বাতিল করেছেন বলে কংগ্রেসের তরফে জয়রাম রমেশ মত প্রকাশ করেছেন। যেখানে ছোট খাটো কোন নির্বাচনেই মোদী প্রচারে যেতে দ্বিধা করেন না এবং আত্মপ্রচার করে তাঁর নিজের নামেই ভোট চেয়ে থাকেন, মিজোরামে প্রচার থেকে তাঁর নিজেকে সরিয়ে নেওয়া অবশ্যই এক ব্যতিক্রমী ঘটনা। এই নিয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে কোনো কারণ দেখানো হয় নি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মণিপুরের দাঙ্গা কবলিত এলাকা থেকে কয়েক হাজার কুকি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ প্রাণ বাঁচাতে মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছেন। এন ডি এ সরকারের শরিক হওয়া সত্বেও মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরাম থাঙ্গা প্রধানমন্ত্রীর সাথে একই মঞ্চে উপস্থিত হতে পারবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন। কেন্দ্রের এবং মণিপুর রাজ্যের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মিজোরামে ব্যাপক ক্ষোভ ঘনীভূত হয়েছে। পুণরায় সরকার গঠনের লক্ষ্যে রাজস্থানে কংগ্রেস নেতৃত্ব ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে। প্রচারে অংশ নিয়েছেন রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। অশোক গহলাত এবং সচিন পাইলটকে সঙ্গে নিয়ে তাঁরা লাগাতার জনসভা করে চলেছেন। রাজস্থানের কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে ঐক্য এবং সরকারের জনমুখী কাজের সাফল্যের ফল কংগ্রেস পাবে বলে অনেকেই মত দিচ্ছেন। প্রতিবার সরকার বদলে যাওয়ার রেওয়াজ বদলে রাজস্থানে পুণরায় সরকার গঠন করতে কংগ্রেস বদ্ধপরিকর। কংগ্রেসের সাথে আছে রাজস্থানের মানুষের আবেগ এবং সমর্থন।কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী রবিবার, ২৫ নভেম্বর, রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির তদারকি করতে জয়পুরে দলের ওয়ার রুম পরিদর্শন করেছেন।রাজস্থান কংগ্রেস ইনচার্জ সুখজিন্দর সিং রান্ধাওয়াও তাঁর সফরে উপস্থিত ছিলেন।রাহুল গান্ধী রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সেন্ট্রাল ওয়ার রুমের চেয়ারম্যান শশীকান্ত সেন্থিল, কো-চেয়ারম্যান লোকেশ শর্মা, যশবন্ত গুর্জার এবং অরবিন্দ কুমারের সাথে কথা বলেন। চলমান কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ নির্বাচনী কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়।ওয়ার রুমে পরিদর্শনের সময় উপস্থিত থাকা রাজস্থান কংগ্রেসের সহ-ইনচার্জ অমৃতা ধাওয়ান বলেন, রাহুল গান্ধী সেখানে দলকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।রাহুল গান্ধী প্রায় আধঘণ্টা ওয়ার রুমে ছিলেন, এই সময় তিনি এর কার্যক্রম সম্পর্কেও খোঁজখবর নেন। রাউন্ড দ্য ক্লক চলা কল সেন্টার সম্পর্কে রাহুল গান্ধীকে অবহিত করেন লোকেশ শর্মা। এই কল সেন্টার রাজ্যের বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ ফোন কল গ্রহণ করে।এই কেন্দ্র (ওয়ার রুম) নির্বাচনে এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। কেন্দ্রটি রিয়েল-টাইম পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করে, এবং ক্রমাগত পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতিবেদন তৈরি করছে। জনসাধারণের দেওয়া প্রতিক্রিয়ার ও তথ্যের ভিত্তিতে নির্বাচনী প্রচারের কৌশলে তৎক্ষণাৎ পরিবর্তন ও সমন্বয় করা হচ্ছে। যা অত্যন্ত কার্যকরী বলে স্থানীয়ভাবে কংগ্রেস দলীয় সূত্রে জানা যায়।
তেলেঙ্গানাতেও কংগ্রেস চমকপ্রদভাবে জয়ের দোরগোড়ায় রয়েছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অভিমত। বি আর এস সরকারের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে এবং কংগ্রেসের পক্ষে সেখানে ব্যাপক জনমত তৈরি হয়েছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে বহু নেতা নেত্রী তেলেঙ্গানায় প্রতিদিন কংগ্রেসে যোগদান করে চলেছেন। মিজোরাম, মধ্যপ্রদেশ, ছত্রিশগড়, তেলেঙ্গানা এবং রাজস্থান বিধানসভার ভোটের ফলাফল ৩ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হবে।