নির্বাচনী বন্ড থেকে বিজেপির বিপুল অর্থ পাওয়া থেকেই প্রমানিত আদানী অম্বানীর বন্ধু কে?

অমিতাভ সিংহ

পিএম কেয়ারের পর নির্বাচনী বন্ড এই সরকারের একটা বড় দুর্নীতি। এই ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষ জানতে পারেন না কর্পোরেট সংস্থাগুলি কোন দলকে কত অনুদান দিচ্ছে। অথচ কোনও নাগরিক ২০ হাজার টাকার বেশী অনুদান দিলে নিজের নাম জানাতে বাধ্য।কিন্তু কর্পোরেট সংস্থাগুলির সেই দায় নেই।
এই অনুদানের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানি কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে একথা আজ আর কারও অজানা নয়। আগে কোনও সংস্থা কোনও দলকে অনুদান দিলে তা জানাতে বাধ্য থাকত।এর ফলে উক্ত সংস্থাটি সরকার থেকে বাড়তি ও অনৈতিক সুবিধা পেত তাহলে মামলা হতে পারত। কিন্তু বর্তমান ব্যবস্থায় তা জানার কোন উপায়ই নেই।চূড়ান্ত অস্বচ্ছতা এই সরকারের ভূষণ। আদানী অম্বানীকে পেছনের দরজা দিয়ে বরাত পাইয়ে বিজেপি দলীয় তহবিলে প্রতি বছর বিরাট অঙ্কের কাটমানি নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচিত সরকার ভাঙছে ও জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে আসছে। এমনকি যে শিল্প সম্পর্কে পরিচালনার কোনও সংস্থার নূণ্যতম অভিজ্ঞতা নেই তাদেরও বৈদেশিক বরাত পাওয়ার ক্ষেত্রে মোদীর গোপন সুপারিশ রাফেল যুদ্ধ বিমান কেনার ঘটনায় প্রমাণিত। রাষ্ট্রীয় সংস্থা হ্যালকে বঞ্ছিত করে তিনগুণ মূল্যে সেই চুক্তির জন্য মোদী যে গোপনে প্রভাব খাটিয়েছিলেন তা বিভিন্ন তদন্ত রিপোর্টে প্রমাণিত। ঐ বরাত পেয়েছিল দেউলিয়া হওয়া অনিল অম্বানীর একটি নতুন তৈরী সংস্থা। এটার বিনিময়ে হাঙরের দল যে বিপুল অর্থ নিয়েছে তা বোদহয় বলে দিতে হবে না। আবার এই যে তিনগুণ দামে যুদ্ধবিমান কেনা হল তা তো দেশের মানুষের পকেট থেকেই নেওয়া।

এবার দেখা যাক গত পাঁচ বছরে ( ২০১৭-১৮ থেকে ২০২১-২২) কোন দল কত টাকা পেয়েছে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে।

মোট অর্থমূল্য(কোটি টাকায়)ঃ ৯২০৮.২৩
বিজেপিঃ ৫২৭১.৯৭
কংগ্রেসঃ ৯৫২.২৯
তৃণমূলঃ ৭৬৭.৮৮
বিজেডিঃ ৬২২.০০
ডিএমকেঃ ৪৩১.৫০
এনসিপিঃ ৫১.১৫
আপঃ ৪৮.৮৩
জেডিইউঃ ২৪.৪০

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ সব রাজনৈতিক দলকে এই অনুদানের বিশদ নথি মুখবন্ধ খামে নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেওয়ার ব্যাপারে যে অন্তর্বতী আদেশ ২০১৯ সালে দিয়েছিল তা বহাল রেখেছেন।
সুপ্রিম কোর্টে ইলেকটোরাল বন্ড এ কোন কর্পোরেট সংস্থা কোন দলকে কত টাকা দিয়েছে তা জানতে চেয়ে মামলা করেছেন কংগ্রেস ও সিপিএম এর পক্ষে জয়া ঠাকুর। এছাড়া
এসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রাইটস
(এডিআর)ও এই আবেদন করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার হলফনামা দিয়ে বলেছে নাগরিকদের এই তথ্য জানার কোনও অধিকার নেই। এরপরেও কি বলতে হবে আমরা কোন গণতন্ত্রে বাস করছি?

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *