অমিতাভ সিংহ
গত বৃহস্পতিবার সুরাটের আদালত মোদীর মানহানি(?) মামলায় রাহুল গান্ধীকে দুইবছর কারাদন্ডের সাজা দেয়। মানহানির মামলায় ঠিক দুবছর কারাদন্ডের সাজা কেন সে প্রশ্ন যে প্রতিহিংসার সাথে জড়িয়ে আছে তা বলাই বাহুল্য। সাজা ঘোষনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে রাহুল গান্ধীর সাংসদপদ কেড়ে নিল সরকার,যদিও আদালত রাহুল গান্ধীকে জামিনে মুক্তি দিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করার অনুমতি দিয়েছে।
এরপর ঠিক এক কর্মদিবসের মধ্যে চারবারের সাংসদকে ২৫ দিনের মধ্যে সরকারী বাংলো খালি করে দেওয়ার নির্দেশ। যদিও বিজেপির প্রাক্তন নেতা লালকৃষ্ণ আদবানী বা মুরলী মনোহর যোশী সাংসদ না হয়েও সরকারী বাংলোতে দীর্ঘদিন ধরেই বাস করছেন। প্রশ্ন একটাই এত তাড়া কিসের? কিজন্য কর্নাটকে নির্বাচনী জনসভায় ২০১৯ সালে করা একটি প্রশ্ন করায় গুজরাটের আদালতে মামলা করে রাহুল গান্ধীর বক্তব্য শোনা,তারপর তা গুজরাট হাই কোর্টে স্থগিত করা ও তারপর আদানিকান্ডের পর রাহুল গান্ধীর বার বার মোদীকে তার সাথে আাদনিদের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরপরই আবার নিম্ন আদালতে ঐ মামলাটিকে এনে পছন্দমত বিচারপতির এজলাসে ফেলে চার বছর পর রাহুল গান্ধীর বিচার চাইতে হল? এর উত্তর লুকিয়ে আছে রাহুল গান্ধীর নাছোড় মনোভাব। মোদীর কিছু জালিয়াত শিল্পপতি আছে যারা বিভিন্নসময়ে বিজেপি তথা মোদীর জন্য ঢালাও অর্থ খরচ করে,কখনও নির্বাচনী প্রচারে বা কখনও নির্বাচিত সরকার ভাঙার কাজে। মোদী তাদের জন্য বিভিন্ন অনৈতিক কাজ, যেমন তাদের হয়ে বিভিন্ন দেশে তদ্বির করে এসেছেন সেই রাফেলের সময় থেকে। রাহুল গান্ধী শুধু প্রশ্ন তুলেছিলেন তাদের সাথে মোদীর কি সম্পর্ক?আদানির মত ভুঁইফোড় একটা সংস্থায় বিশ হাজার কোটি টাকা কিভাবে এল? এর কোন জবাব মোদী দিতে না পেরে এই সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যার সূচনা হয় লোকসভার অধিবেশনে বিজেপির বাধাদান থেকে।
একটু পেছনে ফিরে যাওয়া যাক।
এমাসের গোড়ায় দেশের শীর্ষ আদালত আদানি কান্ডের তদন্তে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভয়মোহন সাপ্রের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে।এই কমিটিতে আছেন ব্যাঙ্ক বিশেষজ্ঞ ও.পি.ভাট ও কে ভি কামাথ,প্রযুক্তবিদ নন্দন নিলেকানি,বিচারপতি জে পি দেওধর ও আইনজীবী সোমাসুন্দর সুন্দরসেন।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতারণা,নিজেদের সংস্থার শেয়ার ঘুরপথে বিদেশে ভুয়ো সংস্থা গঠন করে তাতে লগ্নির মাধ্যমে শেয়ার দর বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তার পর থেকে শেয়ার বাজার ক্রমশ ধসে গিয়ে সাধারন মানুষদের সর্বনাশা পরোয়ানা নিয়ে আসে।সাধারন লগ্নীকারীদের লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ নষ্ট হয় ।
কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলি এই জালিয়াতির যৌথ সংসদীয় কমিটিকে দিয়ে তদন্ত দাবি করে।তারা বলে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষজ্ঞ কমটির পক্ষে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও শেয়ারের দর বৃদ্ধি সংক্রান্ত কারচুপির তদন্ত করা সম্ভব নয়।এই তদন্ত একমাত্র যৌথ সংসদীয় কমিটি বা জেপিসিই করতে পারে।উল্লেখ করা যেতে পারে বোফর্স বিমান ক্রয় চুক্তিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর নাম ওঠায় তিনি নিজে জেপিসি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
পুরো বাজেট অধিবেশনটিতে বিজেপি গন্ডোগোল সৃষ্টি করে সংসদ চলতে দেয় নি। আদানি কান্ডের জেপিসির দাবী থেকে কংগ্রেসসহ বিরোধীরাও সরে আসে নি। সুপ্রিম কোর্টের বিশেষজ্ঞ কমিটিকে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণা ও শেয়ারের দরে কারচুপির তদন্ত করতে বলা হয় নি।বলা হয়েছে মূলত নীচের চারটি বিষয়ে তদন্ত করতে।
১) পরিস্থিতির সামগ্রিক পর্যালোচনা ও শেয়ার বাজার ওঠানামার কারন।
২) লগ্নীকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ
৩) আদানি গোষ্ঠী ও অন্য সংস্থার ক্ষেত্রে শেয়ার বাজারে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় ব্যর্থতা ছিল কিনা
৪) শেয়ারে লগ্নীকারীদের স্বার্থরক্ষায় নিয়ন্ত্রণ বা আইনি ব্যবস্থা শক্তিশালী করার প্রয়েজন।
এসবই ভবিষ্যৎ এর দিকে তাকিয়ে।দেশের কয়েক কোটি লগ্নীকারীদের অর্থ যে এই সর্ববৃহৎ প্রতারনার ফলে উড়ে গেল তার বিচার কে করবে?কিভাবে এতগুলি বিমানবন্দরের বরাত তারা পেল বা কি পন্থায় আদানিদের বংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের বরাত পাইয়ে দেওয়া হল ও এতে কার সুপারিশ ছিল,আদানিদের প্রতারণা দেখেও সেবিসহ অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলিদের ভূমিকা,এলআইসও,এসবিআই দের আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে লগ্নি করতে বাধ্য করা হয়েছিল কিনা এসব একমাত্র জেপিসি তদন্ত করতে পারে বলে বিরোধীদের অভিমত হলেও সুপ্রিম কোর্ট সেদিকেই যায় নি।সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে এ বিষয়ে সেবি তদন্ত করবে।সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে এই ফ্যাসিস্ত সরকারের আমলে কি করে তা সম্ভব? যেখানে খোদ আদালত বিভিন্ন ব্যাপারে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস অর্জন করতে পারে নি।পেগাসাস স্পাইওয়ারের ঘটনা একটি উদাহরণমাত্র।গত কয়েকবছর ধরে অত্যন্ত মূল্যবান মামলা,সংবিধান লঙ্ঘনের মামলা ইত্যাদি পড়ে আছে।বেশ কয়েকজন প্রধান বিচারপতি বদল হলেও সেগুলি সরকারের বিরুদ্ধে বলে এখনও বিচারের জন্য আদালতে তোলা হয় নি।
এবার দেখে নেওয়া যাক আদানির দ্রুত উত্থান কিভাবে হল? বছর দশেক আগে কেউ আদানিদের নাম শুনেছিলেন কিনা তাতে ঘোরতর সন্দেহ আছে।মোদীর মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় গুজরাটের একজন গড়পড়তা ব্যবসায়ী ছাড়া কেউ তাদের বেশী কিছু ভাবত না।বোম্বাই জাভেরি বাজারের হিরে ব্যবসায়ী।টাটা,বিড়লা,বাজাজ,গোডরেজ গোষ্ঠী বহু প্রজন্ম ধরে গড়ে উঠেছে।কিন্তু আদানি? ভারতের অর্থব্যবস্থা একটা স্থান উল্কার গতিতে দখল করে নিয়েছে মোদীর জমানায়। গুজরাটের মুন্দ্রায় এসইজেড পরিচালনা,সবথেকে বড় বেসরকারি সমুদ্রবন্দর এই মুন্দ্রা আদানি পরিচালিত। ১২ টি সমুদ্রবন্দর তাদের কব্জায়।এরইমধ্যে দুটিতে প্রচুর পরিমান মাদক ধরা পড়লেও তা চেপে গেছে গদি মিডিয়া।আরও একটির বরাত রয়েছে মমতা ব্যানার্জীর রাজ্যে, তাজপুরে।দেশের বাইরেও তারা পা ফেলেছে, অস্ট্রেলিয়া, পেগসাস খ্যাত ইজরায়েল,শ্রীলংকা ইত্যাদি। দেশের ৭ টি এয়ারপোর্ট তারা পরিচালনা করছে।জাহাজ,রেলের রেক,ভোজ্যপণ্য, গুদাম,ডেটা সেন্টার,রাস্তা নির্মান,আবাসন,জয়েন্ট ভেঞ্চারে দ্রন তৈরী,কয়লা খনি তাদের কব্জায়।দেশে কয়লা খনি সবচেয়ে বেশী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা কোল ইন্ডিয়ার।তার পরের স্থানটি আদানিদের।খনি পরিচালনা করছে ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়াতে।বিদ্যুত উৎপাদনেও পেছিয়ে নেই তারা।অন্ততপক্ষে ১০ টি বিদ্যুৎ উদপাদন কেন্দ্র তাদের করায়ত্ত ।এখানেও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এনটিপিসির পরেই তাদের স্থান।
পাইপবাহিত রান্নার গ্যাস ও গাড়ীর জ্বালানি বা বিভিন্ন শিল্পে যে গ্যাস লাগে সেখানেও তারা দেশের মধ্যে দ্বিতীয়।গেল বা গ্যাস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার থেকেও এগিয়ে।সোলার এনার্জি ও বায়ু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও এরা পা রেখেছে।অর্থাৎ দেশের পরিকাঠামোর জন্য যা যা প্রয়োজন সব জায়গায় আদানিদের নিয়ন্ত্রণ বেশ পাকাপোক্ত।যেমন ধরুন সিমেন্ট শিল্প।এসিসির মত প্রাচীন সিমেন্ট উৎপাদন সংস্থার সাথে বিড়লা সিমেন্ট তারা কিনে নিয়েছে।ভোজ্য তেল ফরচুন ব্রান্ড কয়েকবছরে প্রতিষ্ঠিত। লিটারে বেশ কিছুটা কম পরিমান প্যাক করা নিয়ে অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। আটা,ময়দা ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনেও এই ব্রান্ড বাজারের অনেক উৎপাদককে কৌশলে সরিয়ে দিয়েছে। চাল,ডাল,গম,সর্ষে ইত্যাদি রাখার জন্য বড় বড় আধুনিক গুদাম তারা তৈরী করেছে।তাদের আগে একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া। কৃষি বিল পাস করা হয়েছিল আদানির মত ব্যবসায়ীদের কথা ভেবে।সরকার ভেবেছিল আদানিরা কৃষকদের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে বেশীরভাগ শস্য হাতিয়ে নিয়ে তা এইসব বিশালাকৃতি গুদামে রেখে ইচ্ছামত শস্যকণার মূল্য নির্ধারণ করে দেশের সাধারণ ও গরীব মানুষকে রীতিমত বিড়ম্বনায় ফেলে প্রচুর মুনাফা করবে আর বিজেপির দলীয় তহবিল হীরেয় মুড়ে দেবে।।আবাসন শিল্পেও তারা শ’তিনেক প্রোজেক্ট আরম্ভ করেছে।ক্রেতাদের কাছ থেকে টাকাও নিয় নিয়েছে।এগুলি আদৌ শেষ হবে কিনা কে জানে।লক্ষ লক্ষ মানুষ যারা ফ্ল্যাট বুক করেছিলেন তারা টাকা কবে ফেরৎ পাবেন তা অজানা।প্রতারিত হলেন তারাও।
এরপর আসা যাক বৈদুতিন মাধ্যমে তাদের উপস্থিতি প্রসঙ্গে।প্রণয় রায় পরিচালিত এনডি টিভি কৌশলকরে কিনে নেওয়ার ঘটনাটি কয়েকমাস আগে বেশ আলোড়ন ফেলেছিল।এনডি টিভি একটি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিল।সেই ঋণ দেওয়া সংস্থাটিকে চুপিসারে আদানিরা কিনে নিয়ে এনডি টিভির মালিকানা করায়ত্ত করে।স্বাভাবিকভাবে প্রণয় রায় ও তার পরিবারের সকলে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।এনডি টিভি সরকার বিরোধী অবস্থান নেওয়াতেই এই ব্যবস্থা আদানিকে দিয় যে মোদী স্বয়ং নিলেন তা পরিষ্কার।এর আগে ইন্ডিয়া টিভিও তারা নিয়ে নিয়েছে।এর ফলে জাতীয় স্তরে গোদী মিডিয়ারাজ সম্পূর্ণ হল।
এই যে রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো দ্রুতগতিতে বাগিয়ে নেওয়ার চিন্তা তার পেছনে উদ্দেশ্যটা বুঝতে হবে।সারা দেশের সম্পদ লুঠ করে দেশে রাজত্ব চালানো।এভাবে চলতে থাকলে আগামীদিনে তাদের সর্বগ্রাসী মনোভাব দেশের যে কত বড় সর্বনাশ করবে তার পরিধি এখনই বলা সম্ভব নয়।
২০১৭ সালে ইকনমিক অ্যান্ড পলিটিকাল উইকলির সম্পাদক থেকে সরতে হয়েছিল বিশিষ্ট সাংবাদিক পরন্জয় গুহঠাকুরতাকে আদানি সম্পর্কে একটি নিবন্ধ লেখার দায়ে।সেবছরের শেষে অল ইন্ডিয়া প্রফেশনাল কংগ্রেস আয়োজিত এক আলোচনাসভায় শ্রী গুহঠাকুরতার সঙ্গে পরিচিত হয়ে বেশ কিছু তথ্য জানতে পারি।তিনিই আদানিদের সম্পর্কে প্রথম সাবধান করে দিয়েছিলেন বলে কম লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয় নি।কদিন আগে প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বিশদভাবে এই প্রশ্নগুলো তুলে ধরেছেন।হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট আদানিদের সবরকম সংস্থাগুলি মধ্যে অনেক অস্বচ্ছ ও সন্দেহজনক লেনদেনের উল্লেখ করেছে।হিসাবের খাতায় কারচুপি,কৃত্রিমভাবে শেয়ারবাজারে নিজেদের গোষ্ঠীর শেয়ারের দর বাড়ানো,বহু শেল কোম্পানি তৈরী করে এসব কুকীর্তি করা হয়েছে নিছক জালিয়াতি করে দেশের মানুষের অর্থ ডাকাতি করার জন্য।তাদেরই জমা দেওয়া দলিল অনুযায়ী মরিশাসে নিবন্ধিকৃত এক সংস্থার কথা যারা আদানি গোষ্ঠীর তরফে দুটো সিমেন্ট কোম্পানির শেয়ার বেচা কেনা করবে।সেদুটি হল এসিসি ও বিড়লা সিমেন্ট যাদের মূল্য ৮৩,০০০ কোটি টাকা।অথচ সেই সেল কোম্পানির কেউ আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িয়ে নেই।লেনদেনের জন্য টাকার উৎস ও গন্তব্যের কোন নাম বা ঠিকানা পাওয়া যায় নি।এই গোষ্ঠী ব্যাঙ্ক ও বাজার থেকে প্রচুর পরিমানে ঋণ নেয়। যেটুকু তথ্য পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে ২০২০-২১ সালে সামগ্রিক ঋণ ৩০০০ কোটি ডলারের মধ্যে ব্যাঙ্কের ঋণ ২২৮০ কোটি ডলার।ব্যাঙ্ক যে ঋণ তাদের দিয়েছে তা আমার আপনার সঞ্চয়ের অর্থ।তা মার গেলে কত কোটি মানুষকে পথে বসতে হবে তার হিসাব এই সরকার কবে করবে? আবার আদানি পাওয়ারের ঋণ গোষ্ঠীর সমগ্র মূলধনের অর্ধেকেরও বেশী যা কোম্পানির হিসাব খাতার শক্তির চেয়ে বহুগুণ বেশী।
আবার দেখা যাচ্ছে বিগত কয়েক বছর এই আদানি গোষ্ঠীর উল্কার গতিতে উত্থান ও বৃদ্ধির হার বড়ই চোখে লাগার মতন।বিজেপি ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর ২০২২ সালের শেষ নাগাদ তাদের সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৩০০ শতাংশ। গত পাঁচ বছরে শেয়ার বাজারে এই গোষ্ঠীর সবধরনের সংস্থার মূল্য বেড়েছে ১৩০০ শতাংশ। নামী ব্যাঙ্ক ও এলআইসির সহায়তায় এই সময়ে জল স্থল ও আকাশে পরপর সরকারি পরিকাঠামো নির্মাণ ও তা দেখভালের বরাত পেয়েছেন। তা যে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তাব্যক্তিদের বদান্যতায় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।যে অস্বচ্ছতার সাথে এই কোম্পানি চলেছে তাতে যে কর্মচারীদের পাওনা প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নায্য পাওনা মার যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।ক্ষুদ্র জোগানদার ও লগ্নীকারীদেরও টাকা মার যায়।আদানি কান্ডের ফলে পরিকাঠামো গত শিল্পে প্রবল ধাক্কা লাগবে তো বটেই,সামগ্রিক অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে,কর্মসংস্থান ব্যাহত হবে। সাধারন মানুষেরা সব দিক থেকে অসুবিধায় পড়বে।এবং তার জন্য দায়ী থাকবে তারাই যারা আদানিদের অস্বচ্ছ উত্থানের পেছনে ছিল অর্থাৎ মোদী সরকার বা ব্যাক্ত মোদী স্বয়ং।
এইজন্য রাহুল গান্ধীকে থামানো প্রয়োজন,ছলে বলে কৌশলে।তারই একটা হচ্ছে সুরাটের আদালতের সাজাদান ও সাংসদপদ খারিজ।কিন্তু এইভাবে কি শহীদের বংশধরকে রোখা যাবে?