অমিতাভ সিংহ
ঐতিহাসিক “ভারত ছাড়ো” আন্দোলনের আজ ৮১ তম বার্ষিকী। ক্রীপসের প্রস্তাব কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি ১৯৪২ সালের ১০,১১ ও ১২ এপ্রিল প্রত্যাখ্যান করে চূড়ান্ত আন্দোলনের ডাক দেয়।এর নেতৃত্ব ও রূপরেখা তৈরীর দায়িত্ব পড়ে গান্ধীজির ওপর।এরপর ওয়ার্ধায় ৬ থেকে ১৪ জুলাই ওয়ার্কিং কমিটি আগস্ট বিপ্লব চূড়ান্ত করে যা আমরা ভারত ছাড়ো আন্দোলন বলে জানি। ৭ আগস্ট বোম্বাইতে কংগ্রেস অধিবেশনে পেশ হল ‘ভারত ছাড়ো’ প্রস্তাব।অগ্নিঝরা বক্তৃতায় জওহরলাল বললেন ‘ আমরা এবার শেষ লড়াই এর জন্য প্রস্তুত।’বল্লভবাই এই প্রস্তাব সমর্থন করলেন।মহাত্মাজি জাতিকে প্রস্তুত হতে মন্ত্র দিলেন “Do or Die”, ‘করো ইয়া মরো’।সমগ্র ভারত গর্জন করে উঠলো “করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে”। মৌলনা আজাদের সভাপতিত্বে ৮ আগস্ট মধ্যরাত্রে বিপুল ভোটে পাশ হয়ে গেল ইংরেজ ভারত ছাড়ো প্রস্তাব।৯ আগস্ট ভোর পাঁচটা,একে একে গ্রেফতার হলেন মহাত্মা গান্ধীসহ সমস্ত প্রথম সারির কংগ্রেস নেতৃবিন্দ।
কংগ্রেসে চ্যালেঞ্জ কঠোর হাতে মোকাবিলা করার জন্য তৈরী ইংরেজ সরকার।কিন্তু অত্যাচারীরা কখনও শেষ কথা বলে না।আসমুদ্র হিমাচল নেমে এল রাজপথে,গ্রামে,গন্জে সর্বত্র। বাংলার মেদিনীপুর,হুগলী,দিনাজপুর জুড়ে শুরু হল গণবিক্ষোভ। কলকাতা হল অগ্নিগর্ভ,ওয়েলিংটনস্কোয়ারে ১১ আগস্ট এক বিপুল জনসমাবেশে ইংরাজকে ভারত ছাড়ার আহ্বান জানালো।ঐদিন শ্রীহট্ট,ময়মনসিং,ঢাকায় পালিত হল স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল।
১৩ আগস্ট গণবিক্ষোভের ফলে দিশেহারা কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদত্যাগ করলেন। একের পর এক বিক্ষোভ চলল দেশজুড়ে। ২৮ আগস্ট হল ছাত্রধর্মঘট ও রেলরোকো। বালুরঘাটে ডান্ডি অভিযান হল১৪ সেপ্টেম্বর। ১৭ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে তৈরী হল তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার।স্বাধীনতার শেষ যুদ্ধ শুরু হল এভাবেই।